নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে মাদকসহ একাধিক গুরুতর অপরাধের অভিযোগে আ’লীগ নেতা মোতালিবকে র্যাব-১ গ্রেফতার করেছে। কোটিপতি হওয়া এই নেতা তার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা, জমিদখল, চাঁদাবাজি, নারী কেলেঙ্কারি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার গভীর রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে রূপগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়। স্থানীয়রা জানান, মোতালিব প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় ধরে দাউদপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সেই সুবাদে তিনি এলাকায় নানা অপকর্ম ছাড়াও মাদক ব্যবসার মূল হোতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, মোতালিব ও তার এক সহযোগী নেওয়াজ প্রায় ২০ বিঘা কৃষিজমি জোরপূর্বক দখল করে সেখানে বালু ভরাট করেছেন এবং শতাধিক ভুয়া দলিল তৈরি করেছে। প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা, অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন ও কিশোর গ্যাংয়ের সহযোগিতায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর তথ্যও পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, প্রায় এক দশক আগে মোতালিব এক প্রভাবশালী পরিবারের গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এবং প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী জানিয়েছেন, মোতালিবের নারী কেলেঙ্কারি ও অসামাজিক আচরণের কারণে প্রায় দুই বছর ধরে আলাদা থাকছেন। সম্প্রতি স্থানীয়দের মধ্যে ভাইরাল হয়েছে তার যমুনা ব্যাংকের এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে কক্সবাজারে যাওয়া একটি ভিডিও, যা এলাকায় নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
তার বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন দমনে কাঞ্চন সেতুর কাছে লাঠিচার্জ ও গুলি চালানোর অভিযোগও রয়েছে। ২০২১ সালের ২ অক্টোবর মোতালিব ও তার অপর সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি বাড়িতে অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে হামলা চালিয়ে লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি ও লুটপাটের ঘটনা রূপগঞ্জ থানায় মামলা হিসাবে দায়ের হয়েছে। সেদিন ককটেল বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির মাধ্যমে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম জানান, মোতালিবকে র্যাব-১ গ্রেপ্তার করেছে। তাকে আজ ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রিমান্ডে মোতালিবের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বিস্ফোরক সম্পর্কিত তথ্য ও পলাতক আসামিদের অবস্থান নির্ণয়ে কাজ করা হবে।