ঢাকা | রবিবার | ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

রূপগঞ্জে নেপিয়ার ঘাস চাষে কৃষকদের আশা

রূপগঞ্জে গোখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আবাসনের চাহিদা পূরণের স্বার্থে কৃষি জমিতে নানা হাউজিং কোম্পানির বালি ভরাটের ফলে কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে এই সংকট গড়ে উঠেছে। গৃহপালিত পশুপালনে সর্বশেষ কৃষকদের বড় ভরসা হয়ে উঠেছে নেপিয়ার জাতের ঘাস। বাজারে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি এবং গোখাদ্যের ঘাটতির মধ্যে কৃষকরা চিন্তিত। অনেকেই গোঁফাল পশু কম মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

উপজেলার কাঞ্চন, ভোলাব, দাউদপুর, মুড়াপাড়া, মাঝিনা নদীর পাড়, দেইলপাড়া, নদ্দাসহ অর্ধশতাধিক গ্রামে এখন নেপিয়ার ঘাসের চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বেসরকারি দুগ্ধ খামারিরা ঘর গণে খরচ কমানোর লক্ষ্যে দিক পরিবর্তন করে নেপিয়ার ঘাস চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এই ঘাস আঁশযুক্ত, পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদা খুব বেশি। একবার কেটে নেওয়ার পরও ঘাস মরে না, বরং কাটা অংশ থেকে পুনরায় কুঁড়ি জন্মায় এবং তা পূর্ণাঙ্গ ঘাসে পরিণত হয়, যা কৃষকদের জন্য এক বিশাল সুবিধা।

সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, গোখাদ্য সংকট এবং নেপিয়ার ঘাস চাষের ব্যাপারে তাদের চিন্তা ভাবনা আরও পরিষ্কার হয়েছে। বারৈ গ্রামের কদম আলী জানান, “আমরা গরিব পরিবার, অন্যের জমি চাষ করি। গরু ও ছাগল পালনের মাধ্যমে বাড়তি আয়ের পথ খুঁজছি।” কৃষক টিপু হায়দার বলেন, “খাদ্য সংকটের কারণে আমাদের গরু কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে।”

নেপিয়ার ঘাস দ্রুত বর্ধনশীল, মাত্র ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে কাটা অংশ পুনরায় বড় হয়ে ওঠে। উপজেলা পশুপালন কর্মকর্তা ডা. সজল কুমার দাস জানান, “বর্তমানে পশুখাদ্যের অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে নেপিয়ার ঘাসকে গণ্য করা হচ্ছে। দ্রুত বর্ধনশীল এবং উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এটি লাভজনক, তাই কৃষকরা দিন দিন এর চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এবং গোখাদ্য সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। প্রতি মাসে খামারিদের বিনামূল্যে নেপিয়ার ঘাসের বীজ ও কাটিং সরবরাহ করা হয়। এই ঘাস সাধারণত ১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় এবং এর চাষাবাদ পদ্ধতিও খুবই সহজ।”

এইভাবে, রূপগঞ্জের কৃষকরা নেপিয়ার ঘাস চাষের মাধ্যমে গোখাদ্য সংকট কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন, যা তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।