ঢাকা | রবিবার | ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতারা শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে দেশের স্বপ্নময় নতুন গঠনের লক্ষ্যে ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির সূচনা করেছেন। আজ (১ জুলাই) দুপুরে তারা শহীদ আবু সাঈদের জন্মস্থান পরিদর্শন করেন এবং মোনাজাতের মাধ্যমে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। এরপর আবু সাঈদের বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করেন দলীয় নেতারা।

দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল শুধু স্বৈরাচারী সরকারের পতনের আন্দোলনই নয়, বরং এটি একটি বৃহৎ ছাত্র সীমান্ত পেরিয়ে নতুন সংবিধান ও বিচার ব্যবস্থার জন্য সংগ্রামের সূচনা। এই আন্দোলনে যারা সংহতি প্রকাশ করেছেন, তাঁদের চেতনায় বিপ্লবী বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে এনসিপি তিন দফা দাবির সফল বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবে।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “যৌক্তিক সংস্কারে যদি প্রয়োজন হয়, আমরা পুনরায় সংগঠিত হয়ে ছাত্র-জনসংখ্যার মাঝে নিয়ে আবারও সংগ্রাম সূচনা করব। জুলাই সনদ নিয়ে কোনো প্রকার বিলম্ব বা টালবাহানা আমরা সহ্য করব না। প্রয়োজন হলে আমরা রাজপথে আবারো আন্দোলনে নতুবা নির্বাচনও বলব না।”

দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “ন্যায়সঙ্গত সংস্কার ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা এক ইঞ্চিও সরব না।” কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, গণতন্ত্রের সপক্ষে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়তে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তারা জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংলাপে যেতে চায় কারণ গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন এখনও পূর্ণতা পায়নি। এই পদযাত্রার মাধ্যমে তারা সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ও মতামত জানতে চাইছেন।

দুপুরে শহীদ আবু সাঈদের বাড়ি পরিদর্শনের পর বিকালে তারা শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের স্থলসহ রংপুর নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে দেখবেন।

এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু হবে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর শহীদ মিনার থেকে এবং পরবর্তীতে রংপুরে পার্ক মোড় থেকে বিকেল ৩টায় পদযাত্রা শুরু হয়ে লালবাগ, শাপলা, জাহাজ কোম্পানির মোড় হয়ে টাউন হল মাঠে একটি পথসভায় মিলিত হবে। এরপর ডিসির মোড়, ধাপ, মেডিকেল মোড়, চেকপোস্ট এলাকা ঘুরে সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।

জুলাই আন্দোলনের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে উল্লেখযোগ্য, গত বছরের ১৬ জুলাই রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ঘটে শিক্ষার্থী ও পুলিশের সংঘর্ষ। পুলিশ ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস এবং লাঠিচার্জের আশ্রয় নেয়, যেখানে আবু সাঈদ নির্ভয়ে প্রতিবাদের সামনে দাড়িয়ে ছিলেন এবং পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তখন তিনি হাসপাতলে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শহীদ আবু সাঈদের স্মরণে এই কর্মসূচি জাতীয় নাগরিক পার্টির জন্য একটি প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে এবং দল আরেকবার দাবি জানাচ্ছে দেশের উন্নয়ন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অবিচল থাকার।