ঢাকা | মঙ্গলবার | ২৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা সফর, ১৪৪৭ হিজরি

শেরপুরে দিন দিন বাড়ছে ষাড়ের মোই দৌড় খেলায় মানুষের আগ্রহ

ষাড়ের মোই দৌড় প্রতিযোগিতা শেরপুরের কৃষকদের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয় এক ঐতিহ্যবাহী খেলা। যদিও সময়ের সাথে নানা কারণে এই খেলার জনপ্রিয়তা কিছুটা কমে আসছিল, তবুও শুষ্ক মৌসুমে শেরপুরের বিভিন্ন এলাকায় এ খেলাটি আয়োজন করে স্থানীয়রা খেলাধূলার এ আনন্দকে জীবন্ত রাখছেন। বিশেষ করে শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর নাগপাড়া এলাকায় পালিত হয় মোই দৌড়ের আয়োজন, যেখানে স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষ মিলিত হয়ে খেলার চমৎকার পরিবেশ উপভোগ করেন।

ষাড়ের মোই দৌড় খেলা এক বিশেষ ধরণের প্রতিযোগিতা, যেখানে একটি মোইয়ে চারটি করে ষাড় অবস্থান করে এবং দুইটি মোই দৌড়ায়। প্রতিযোগিতার শুরুতে মোইয়ালের নির্দেশে ষাড়েরা দৌড় শুরু করে। কেউ নির্ধারিত পথের বাইরে গেলে তাকে আউট ঘোষণা করা হয়। খেলার উত্তেজনা বেড়ে যায় যখন রেফারীর বাশির সাড়া পেয়ে ষাড়েরা এগিয়ে যায়। শেরপুরের এই খেলা দেখতে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-যুবক উপচে পড়ে সেখানে এবং উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।

গ্রামীণ বাংলার হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্য রক্ষায় ও নতুন প্রজন্মকে তা জানাতে নাগপাড়া এলাকায় প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হয় বিশাল এই ষাড়ের মোই দৌড় প্রতিযোগিতা। স্থানীয় মানুষের উৎসাহ ও আগ্রহ দেখে আয়োজকরা ভবিষ্যতে নিয়মিত এই খেলা আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এ খেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আটটি মোই দৌড় দলের অংশগ্রহণ ঘটে, যেখানে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার চন্দনপুর গ্রামের ‘হাবু বেপারি’ দল চ্যাম্পিয়ন হয়।

খেলার শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করে ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানে জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সোহানুর রহমান সাইম, শিক্ষক আসমত আলীসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজক আসমত আলী জানান, “এই খেলার প্রতি কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের যে এত ভালবাসা রয়েছে, সেক্ষেত্রে আমরা প্রতিবছরই আয়োজন চালিয়ে যাব।” শেরপুরের এই ঐতিহ্যবাহী ষাড়ের মোই দৌড় খেলা কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি গ্রামীণ সংস্কৃতির এক প্রাণবন্ত সাক্ষর যা স্থানীয় মানুষের জীবনে আনন্দ ও ঐক্যের সেতুবন্ধন রচনা করছে।