ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. হাফিজুল ইসলাম সমকামিতা, নারী শিক্ষার্থী হেনস্তাসহ নানা গুরুতর অভিযোগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দ্বারা চাকরি থেকে নির্বাসিত হয়েছেন।
সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিন্ডিকেটের অনুমোদন এবং উপাচার্যের নির্দেশে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। তিনি জানান, ‘সিন্ডিকেটে পাশ হওয়ার পর উপাচার্যের নির্দেশে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বিস্তারিত ব্যাখ্যা সিন্ডিকেট দিতে সক্ষম।’
অফিস আদেশ অনুযায়ী, বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা করে গত ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৬তম সভায় ৪৪ নম্বর প্রস্তাবের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির কিছু ধারায় মো. হাফিজুল ইসলামের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট বাতিল এবং এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অসন্তোষ দেখা দেয়। শিক্ষার্থীদের দাবি ও পুনর্বিবেচনার অনুরোধের প্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালের সিন্ডিকেটের ২৬৭তম সভায় একটি ব্যাপক তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আবারও গত ৩১ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৬৮তম সাধারণ সভায় মো. হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে তাঁকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে শুরুতে তাঁর বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাতিল ও এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির ব্যবস্থা নেয়া হলেও শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি ওঠে। ২৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে, যা প্রশাসনের আশ্বাসে সাময়িক স্থগিত হয়। পরে ১৬ মে উচ্চতর তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে জবানবন্দি চেয়েও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করে এবং সর্বোচ্চ শাস্তির আশ্বাসে তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে।
এ ঘটনাটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।