ঢাকা | সোমবার | ২১শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

সরিষাবাড়ীর চরাঞ্চলে মিষ্টি আলুর রেকর্ড ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর চরাঞ্চলে এ বছর মিষ্টি আলুর ফলন অসাধারণ। আবহাওয়ার অনুকূলতায় এবং বাজার মূল্যের উন্নতির কারণে কৃষকরা এখন দারুণ আনন্দে দিন কাটাচ্ছেন। মাঠ থেকে আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও কৃষাণিরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ধারাবর্ষা, বড়বাড়ীয়া, কৈজুরী, কান্দারপাড়া, সৈয়দপুর, বয়সিংহ, ভাটারা, মোহনগঞ্জ, কাশারীপাড়া, পাখাডুবী, ফুলবাড়িয়া, পারপাড়া, গোপীনাথপুর, কৃষ্ণপুর, চর হরিপুর, আওনা ও পোগলদিঘাসহ নানা এলাকায় ব্যাপকভাবে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। খরচ কম হলেও লাভের সুযোগ থাকায় চরাঞ্চলের কৃষকরা এখন মিষ্টি আলু চাষে ব্যাপক উৎসাহ দেখাচ্ছেন।

কামরাবাদ ও ভাটারা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ পঁতে ঢাকা ফসলের মাঠ পরিপূর্ণ। কৃষকরা কোদাল দিয়ে জমি আগলা করার পাশাপাশি নারী ও শিশুরা আলু সংগ্রহ করে এক জায়গায় সুরক্ষিত রাখছেন। এরপর কৃষকরা ক্ষেতে বসেই আলু ওজন করে বস্তাবন্দি করছেন। কেউ কেউ মিষ্টি আলুর লতা গবাদিপশুর খাবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল হাই, সাদেক আলী ও রাশেদুল ইসলাম জানান, মিষ্টি আলু চারার রোপণের প্রায় ৯০ দিন পর পুরোপুরি পরিপক্ক হয়। এবারের ফলন সত্যিই রেকর্ডস্বরূপ। ঢাকার চাহিদা অনেক বেশি, তাই পাইকাররা ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে আলু সংগ্রহ করছেন। মিষ্টি আলু মাঠ থেকেই পাইকারি বিক্রি হচ্ছে, পরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ট্রাকযোগে পাঠানো হচ্ছে।

মিষ্টি আলু চাষি আব্দুল মোতালেব জানান, এই মৌসুমে নদীর ধারের প্রায় এক একর জমিতে তিনি চাষ করেছেন। প্রতি শতাংশে দুই মণের অধিক ফলন হয়েছে, এবং ১ বিঘা জমিতে ১০০ মণও ছাড়িয়ে গিয়েছে। প্রতি মণ মিষ্টি আলু তিনি ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন। খরচ বাদে লাভ যথেষ্ট, যা অন্য ফসল থেকে পাওয়া দুষ্কর।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অনুপ সিংহ জানান, লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এ বছর মিষ্টি আলুর চাষ বেড়ে ৬৭৫ হেক্টর জমিতে হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯৫ হেক্টর বেশি। কম খরচে বেশি লাভের কারণে চরাঞ্চলের কৃষকরা মিষ্টি আলু চাষের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। মিষ্টি আলুর এই সফল চাষ সারাদেশে আশা উদ্রেক করছে।