সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীরা একের পর এক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। সরকারি ওষুধের অভাবে টাকা দিয়ে ওষুধ কিনতে হচ্ছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠানো হচ্ছে, चिकित्सক ও হাসপাতালের কিছুনির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া, হুইলচেয়ার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অর্থ আদায়, সরকারি ওষুধের বিক্রি ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রোগীদের বিক্রি করার মতো নানা অনিয়মের ঘটনাও ঘটছে, যা সঠিক চিকিৎসা পাওয়াকে জটিলতায় ফেলেছে।
সেনাবাহিনীর একটি দল খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সরকারি ওষুধ বিক্রির অভিযোগে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ওয়ার্ড বয় হরষিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। হরষিত স্বীকার করেছেন, প্রায় ছয়-সাত মাস আগে তিনি হাসপাতালের ডাস্টবিন থেকে কিছু ওষুধ বেয়ে এনে বিক্রির সুযোগ নিয়ে থাকেন। তার কাছ থেকে কেনা ছয়টি ওষুধের মধ্যে দুটির মেয়াদোত্তীর্ণ, যার ফলে রোগীরা বিপাকে পড়েছে।
কাটিয়া এলাকার মোহাম্মদ আলী জানান, ঈদের পরদিন স্ত্রীর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে গেলে ওয়ার্ড বয় তাকে কম দামে ওষুধ বিক্রি করেছেন। কিন্তু পরে স্ত্রীর শরীরে ওই ওষুধের ফলে জ্বালা-পোড়া এবং জ্বরের মতো সমস্যা দেখা দেয়। পরে জানা যায় যে, ওই ওষুধগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল।
অন্যদিকে, অসন্তুষ্ট এক রোগী আব্দুল গফুর বলেন, হাসপাতাল জুড়ে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। পরীক্ষা করাতে, হুইলচেয়ারে টয়লেটে নিয়ে যেতে সব জায়গায় টাকা চাওয়া হয়, যা একটি সরকারি হাসপাতালে গ্রহণযোগ্য নয়।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন বেলাল জানান, তারা বিভিন্ন সময়ে এই ধরনের অনিয়ম নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাসভা করেছেন। হাসপাতালের স্টোরে পরিপূর্ণ ওষুধ রাখা এবং তা সুষ্ঠুভাবে রোগীর হাতে পৌঁছানো প্রয়োজন। ওষুধ কীভাবে ওয়ার্ড বয়ের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে, তা বিষয়টি গভীর তদন্তের দাবি তাদের।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. কুদরতে খোদা জানান, তিনি ওষুধ বিক্রির বিষয়টি আগে জানতেন না। তিনি অভিযোগ দেওয়ার জন্য রোগীদের পরিবারকে অনুরোধ করেন এবং যাঁরা এই অবৈধ কার্যকলাপ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
এমন অবস্থায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সুষ্ঠু ও নির্ভরযোগ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।