শেখ হাসিনা সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান
এফ রহমান এবং তার ছেলে আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ শায়ান এফ
রহমানকে পুঁজিবাজারে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড
এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বুধবার (৩০ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি জানায়,
বিএসইসির ৯৬৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কমিশন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এ সভায় সালমান ও তার পুত্র
শায়ানকে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি সালমানকে ১০০ কোটি টাকা এবং শায়ানকে ৫০ কোটি টাকা
জরিমানা করা হয়েছে।
কমিশন গঠিত পুঁজিবাজার অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইএফআইসি
ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান সালমান ও ভাইস চেয়ারম্যান শায়ান ‘আইএফআইসি আমার বন্ড’
নামে বাজারে আইএফআইসি ব্যাংকের ইস্যু করা— এমন ধারণা দিয়ে যে বন্ড ছেড়েছিল তা আদৌ
ব্যাংকটির ইস্যুকৃত না। আইএফআইসি ব্যাংক বন্ডটির জামিনদার ছিল কিন্তু ইস্যু করা
বন্ড থেকে টাকা তুলেছে শ্রীপুর টাউনশিপ লিমিটেড নামের একটি রিয়েল স্টেট কোম্পানি।
এতে করে ব্যাংকের বন্ডের কথা বলে রীতিমতো বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
২০২৩ সালে ৪ জুন ১০০০ কোটি টাকা ইস্যু মূল্যের অনুমোদিত এ বন্ডের পুরো প্রক্রিয়াই
কমিশনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হিসেবে তদন্তে উঠে এসেছে।
পড়ুন: ৭ দিনের রিমান্ডে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল
সালমান এবং শায়ান ছাড়াও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বন্ড প্রতারণার দায়ে ইস্যু করা বন্ডের
অ্যাডভাইজর অ্যান্ড অ্যারেঞ্জার আইএফআইসি ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডের সাবেক প্রধান
নির্বাহী (সিইও) ইমরান আহমেদকে পাঁচ বছরের জন্য পুঁজিবাজারের সব ধরণের কার্যক্রম
থেকে নিষিদ্ধ করেছে কমিশন।
প্রশ্নবিদ্ধ এ বন্ড অনুমোদন দেওয়ায় বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান শিবলী
রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আজীবন নিষিদ্ধ এবং তৎকালীন কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদকে
পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া আইএফআইসি ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালক শাহ আলম সারওয়ারের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট
কার্যক্রম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইএফআইসি ব্যাংককে সতর্ক করার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
এর পাশাপাশি ব্যাংকটির সে সময়কার পরিচালক এআরএম নাজমুস সাকিব, গোলাম মোস্তফা, জাফর
ইকবাল, কামরুন নাহার আহমেদ এবং সুধাংশু শেখর বিশ্বাসকে সতর্ক করবে কমিশন।
ইস্যু করা বন্ডের ক্রেডিট রেটিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমার্জিং ক্রেডিট রেটিং
লিমিটেডকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বন্ড প্রতারণায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।