ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ২৪শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

সালাহউদ্দিনের দাবি: ইসি নিশ্চিত করুন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা পেয়েছি কিনা

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ জাতিকে নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির বার্তা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) জানিয়েছেন কিনা।

তিনি বলেন, “আমরা গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। লন্ডনের বৈঠকের পর আমরা আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধ ও রমজান শুরু হওয়ার আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি অবহিত করবেন।”

আজ শুক্রবার গুলশানের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় কিংবা নির্বাচন কমিশন আলোচনা বিষয়টি দ্রুত জনগণের সামনে তুলে ধরবে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টা আসলেই ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, রমজান আসার পূর্বে নির্বাচনের প্রস্তুতির বার্তা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে পাঠিয়েছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে এটি সম্পর্কে উভয় পক্ষ স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত নই। জাতির সামনে বিষয়টি স্পষ্ট করা প্রয়োজন, যা হলে আমরা আশ্বস্ত হবো।’’

গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এন নাসির উদ্দিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সালাহউদ্দিন বলেন, নির্বাচন কমিশন ইতিপূর্বে বলেছে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল কেনাকাটা প্রক্রিয়া এবং প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে, এছাড়া অন্যান্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা প্রক্রিয়াও সমাপ্ত হয়েছে।

তিনি জানান, শুধু মাত্র সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে, যা পরের তিন মাসের মধ্যে সমাপ্ত করা সম্ভব। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অফিসার নিয়োগ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিকল্পিতভাবে চলবে, যা বিশেষ কোনো অতিরিক্ত প্রস্তুতির প্রয়োজন হবে না।

সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির দাবি প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, এসব দাবি কার্যকর নয়। তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন দাবি তুলতে পারে, কিন্তু বেশিরভাগ দলের মধ্যেই ২০২৬ সালের নির্বাচনের সময় নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই।’’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষে এই সময়ের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করা প্রায় অসম্ভব। স্থানীয় নির্বাচন যেমন ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা কিংবা সিটি করপোরেশন নির্বাচন কমপক্ষে ছয় মাস সময় নিয়ে প্রস্তুত হতে হয়। এখন যদি স্থানীয় নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে তারা সময়মতো জাতীয় নির্বাচন করাতে ব্যর্থ হতে পারে।’’

সালাহউদ্দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য নয়, বরং আমাদের ভোটাধিকারের জন্য লড়েছি। এখন নির্বাচন কমিশনের প্রধান দায়িত্ব হলো জনগণের প্রত্যাশা ও আশা পূরণ করে জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠু আয়োজন করা।’’