বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ জাতির কাছে স্পষ্ট করে জানাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির বার্তা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) জানিয়েছেন কিনা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। লন্ডনের বৈঠকের পর আমরা আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধ ও রমজান শুরুর আগে জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাবেন।’’
শুক্রবার গুলশানে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সালাহউদ্দিন এ কথা বলেন। এর আগে গত ২৬ জুন অধ্যাপক ইউনূস ও সিইসির মধ্যে বৈঠক হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা আশা করছি প্রধান উপদেষ্ঠার কার্যালয় বা নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত জানাবে।’’
তিনি জানান, ‘‘সবাই ধরা নিচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ও রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত বার্তা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে পৌঁছে দিয়েছেন। তবে আমরা স্পষ্ট জানি না তিনি আসলেই এই বার্তা দিয়েছেন কিনা বা কোনো পরামর্শ দিয়েছেন কিনা। উভয় পক্ষ যদি এই তথ্য জাতির সামনে স্পষ্ট করেন, আমরা নিশ্চিন্ত হবো।’’
তৃতীয় বার্ষিক বৈঠকের দিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এন নাসির উদ্দিন।
সালাহউদ্দিন আরও জানান, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে জানিয়েছে তারা সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি, বিশেষ করে ক্রয় প্রক্রিয়া শেষ করবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ হয়ে গেছে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া বাকি, যা তিন মাসের মধ্যে শেষ করা সম্ভব। তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর পোলিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন ও প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং এগুলোতে অতিরিক্ত বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই।
তিনি সংসদ নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামি ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থানীয় নির্বাচনের দাবি সম্পর্কে বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দাবি করতে পারে, তবে বেশিরভাগ দল প্রধান উপদেষ্টার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এ বিষয়ে একমত।’’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একই সময়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করানো প্রায় অসম্ভব। স্থানীয় নির্বাচন যেমন ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা এবং সিটি করপোরেশন হওয়ার জন্য অন্তত ছয় মাস সময় লাগে। এখন যদি স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে সময়মতো জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা কঠিন হতে পারে।’’
তিনি দেশের জন্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করানোকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন। সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা স্থানীয় নির্বাচন নয়, আমাদের ভোটাধিকারের জন্য লড়াই করছি। এখন নির্বাচন কমিশনের প্রধান দায়িত্ব জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া।’’