ঢাকা | বুধবার | ২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

সিরিয়ার লাতাকিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানো শুরু

সিরিয়ার উপকূলীয় লাতাকিয়া প্রদেশে ভয়াবহ দাবানলের প্রভাবে আবাসিক এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। শুক্রবার দেশটির কর্তৃপক্ষ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

কয়েক দিন ধরেই সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়ছে। দমকলকর্মীরা প্রবল বাতাস এবং তীব্র খরার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।

দামেস্ক থেকে পাওয়া বার্তা মতে, লাতাকিয়া প্রদেশের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল কাফি কায়্যাল রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানাকে জানিয়েছেন, কাস্তাল মা’আফ এলাকায় ছড়িয়ে পড়া দাবানল আশপাশের কয়েকটি গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। সেইসব এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা দ্রুত বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।

সিরিয়ার সিভিল ডিফেন্স, যা হোয়াইট হেলমেটস নামেও পরিচিত, জানিয়েছে যে, উঁচুতে উঠে আসা ধোঁয়া উপকূলীয় পর্বতমালার উত্তরাংশ, হামা শহর ও তার আশপাশের এলাকা এবং দক্ষিণ ইদলিব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে।

তারা আরও জানিয়েছে, লাতাকিয়ার গ্রামীণ এলাকায় দাবানলের প্রভাবে বহু বাগানের ফসল ধ্বংস হয়ে গেছে।

নাগরিকদের প্রতি সরকার একটি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে, যদি কেউ আগুন লাগানোর সন্দেহভাজন ক্রিয়াকলাপে জড়িত হয় তবে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খরার মাত্রা বৃদ্ধি ও দাবানলের ঘটনা বেড়েই চলেছে, যা সিরিয়ার জন্যও প্রযোজ্য। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটি তীব্র তাপপ্রবাহ, কম বৃষ্টিপাত এবং ভয়াবহ দাবানলের সমস্মুখীন হয়েছে।

গত জুনে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানায়, সিরিয়ায় গত ৬০ বছরে এত খারাপ জলবায়ু পরিস্থিতি হয়নি। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, এই নজিরবিহীন খরার কারণে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পতিত হতে পারে।

নতুন করে গৃহযুদ্ধের এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাত দেশটির already দুর্যোগগ্রস্ত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসন শেষ হওয়ার পর এখনও রক্ষণশীল ও রাজনৈতিক রূপান্তর অব্যাহত রয়েছে।

আব্দুল কাফি কায়্যাল জানান, লাতাকিয়া অঞ্চলে আগের যুদ্ধ থেকে অবশিষ্ট মাইন ও বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধার কার্যক্রম দাবানলের কারণে পিছিয়ে গেছে। এছাড়াও প্রবল বাতাস আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ায় স্থানীয় জনগণ এবং কর্তৃপক্ষের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।