ঢাকা | সোমবার | ২১শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে অবাধ মাছ ও কাঁকড়া শিকার চলছেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে

সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের অভয়ারণ্য এলাকায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে চলছে মাছ ও কাঁকড়া শিকার। প্রতিদিন শত শত জেলে অবাধে নদী ও খালে প্রবেশ করে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে দেখা যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সুন্দরবনের দোবেকী, পুষ্পকাটি, নোটাবেকী, হলদেবুনিয়া, মান্দারবাড়িয়া, কাছিকাটা, আঙরাকেনা, বালিঝাকি, পাকড়াতলী, খোবরাখালীসহ একাধিক নদী ও খাল সরকারিভাবে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকায় সব ধরনের নৌযান চলাচল এবং মৎস্য আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

কিন্তু বাস্তবে অবস্থা ভিন্ন। প্রতিদিন অসংখ্য জেলে বাইনজাল, পাটাজাল, নেটজাল, ফাঁসজাল, দোণা ও বড়শি ব্যবহার করে অবৈধ শিকার চালাচ্ছে।

কিছু জেলের বরাত দিয়ে জানা যায়, তারা বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে সাপ্তাহিক বা পনের দিনের ভিত্তিতে একটি চুক্তির মাধ্যমে অভয়ারণ্যে প্রবেশের অনুমতি পায়। প্রতি চক্রে ফাঁড়ি ও স্টেশনের ভেদে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা দিয়ে তারা নির্বিঘ্নে শিকার চালাতে সক্ষম হচ্ছে।

জেলেরা উল্লেখ করেছেন, তারা জানে এটি আইনের বিরুদ্ধে, কিন্তু জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে এসব করছেন। যারা এই চুক্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাদের নৌকা অভয়ারণ্যে ঢুকতে দেওয়া হয় না।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা সোলাইমান হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অবৈধ মাছ ও কাঁকড়া শিকারের মাত্রা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। তার পরোক্ষ সহযোগিতায় নটাবেকী, হলদেবুনিয়া, দোবেকী, কাছিকাটা, বালিঝাকি, ডিঙ্গিমারী, কাকাদোবেকী, আঙরাকোনা, পাকড়াতলীসহ বিভিন্ন স্থানে শত শত নৌকা প্রতিনিয়ত অবৈধ শিকার চালাচ্ছে।

সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত সহকারী বন সংরক্ষক ফজলুল হক বলেন, অভয়ারণ্যে কোনো নৌকাকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না। যদি কেউ নিয়ম ভঙ্গ করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে তার এই বক্তব্যের কোনো মিল লক্ষ্য করা যায় না।