ঢাকা | শনিবার | ২৬শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা সফর, ১৪৪৭ হিজরি

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে থাকবে না দলীয় প্রতীক

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এবার থেকে দলীয় প্রতীক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রস্তাবিত চারটি আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে, যার ফলে দলীয় প্রতীক প্রথা বাতিল হবে।

বৈঠক শেষে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এই তথ্য জানান। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকবেনা এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

আসিফ মাহমুদ সজীব বলেন, ‘‘২০১৫ সালে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের মাধ্যমে অংশগ্রহণের আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু এখন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট আইন থেকে দলীয় প্রতীকের ধারাটি বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করা হয় এবং তা অনুমোদিত হয়েছে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘সিটি কর্পোরেশন আইন, পৌরসভা আইন, উপজেলা পরিষদ আইন ও ইউনিয়ন পরিষদ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো বাতিল করার মাধ্যমে এবার থেকে নির্বাচনে আলাদা আলাদা প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করতে হবে। এর ফলে নির্বাচনে হানাহানি কমে আসবে এবং যোগ্য প্রার্থীরা তাদের ব্যক্তিগত যোগ্যতার ভিত্তিতে জিতে আসতে পারবেন।’’

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের অবসানের প্রভাব নিয়ে জানতে চাইলে আসিফ মাহমুদ জানান, ‘‘এই সংশোধনী চলমান নির্বাচন সংস্কার কর্মসূচির অংশ। তবে জাতীয় নির্বাচন কখন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করে।’’

উপদেষ্টা পরিষদের সভার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য একটি পে কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই কমিশনের প্রধান করা হয়েছে সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে। ছয় মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

২০১৫ সালে সর্বশেষ বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হলেও সময়ের পরিবর্তন ও মূল্যস্ফীতির মাত্রা বিবেচনায় নতুন বেতন কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তার পাশাপাশি গোপালগঞ্জে সংঘটিত হামলার ঘটনাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

অপরদিকে, মাইলস্টোন স্কুলে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর ঘটনায় গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান রয়েছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘এই ধরনের গুজব প্রচার একটি দুঃখদ শোকের মাঝেও সমাজে অশান্তি সৃষ্টির কারণ হতে পারে। তাই গুজব ছড়ানো ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং মিডিয়াকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।’’

এছাড়া উপদেষ্টা পরিষদে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক আইএলও কনভেনশন নং ১৫৫ ও ১৮৭ এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন নং ১৯০-এর অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা ও ন্যায়পরায়ণতা বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।