ঢাকা | সোমবার | ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

হাসিনা-ইউনূস দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঁঠা’ হচ্ছি: টিউলিপ সিদ্দিক

ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য ও প্রাক্তন ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করেছেন যে, বাংলাদেশে দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর তাকে ‘বলির পাঁঠা’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ স্পষ্ট করেছেন, এই মামলা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে চালানো হচ্ছে। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানের সঙ্গে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা জানান।

৪২ বছর বয়সী এই লেবার পার্টির নেত্রী জানান, গত সপ্তাহে এক সাংবাদিকের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, ঢাকা জেলার পূর্বাচলে জমি বরাদ্দে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে তাকে এবং আরও ২০ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার প্রথম শুনানি আগামী ১১ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।

তবে টিউলিপ বলেন, তিনি এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক সমন পাননি এবং অভিযোগপত্রও দেখেননি। তিনি বর্ণনা করেন, ‘আমার জীবন যেন এক অদ্ভুত দুঃস্বপ্নের মধ্যে আটকা পড়েছে, যেখানে বিচার শুরু হতে যাচ্ছে, কিন্তু আমি জানি না আমার বিরুদ্ধে আসলেই কী অভিযোগ আনা হয়েছে।’

বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেহেতু যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই, তাই প্রয়োজনে টিউলিপের অনুপস্থিতিতেই মামলা চলতে পারে।

বিগত বছরের জুলাইয়ে লেবার পার্টির নির্বাচনী জয়ের পর তিনি অর্থনৈতিক সচিব ও সিটি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং তার কাজ উপভোগ করছিলেন। কিন্তু একই সময়ে বাংলাদেশে ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে সরকারের পতন ঘটে। ক্ষমতা পরিবর্তনের পর অর্থনীতিবিদ ও শেখ হাসিনার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর থেকে টিউলিপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠতে শুরু করে।

শুরুতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি নিয়ে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে, যা টিউলিপ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন। এরপর ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রসে একটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার অভিযোগ আসে, যা টিউলিপ ব্যাখ্যা করেছেন।

নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্য কারো মালিকানাধীন বাড়িতে থাকার বিষয় নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়লেও, যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীদের নীতিগত আচরণবিধি পর্যালোচনার স্বাধীন উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস তার আর্থিক বিষয়াদি তদন্ত করে তাকে সব অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছেন।

টিউলিপ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর তার ওপর নোংরা রাজনীতি চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এটি মুহাম্মদ ইউনূস ও আমার খালা শেখ হাসিনার মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলাফল, আর আমি তার বলি। বাংলাদেশে যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, কিন্তু আমি তাদের মধ্যে নই।’