জাতিসংঘ জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানি বৃদ্ধির ফলে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বিশ্ব বাণিজ্য প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। জেনেভা থেকে প্রকাশিত অধিবৃত্তের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আঙ্কটাড) এর অর্থনীতিবিদ আলেসান্দ্রো নিকিতা উল্লেখ করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে শুরু হওয়া বাণিজ্য যুদ্ধে সত্ত্বেও, ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধের তুলনায় বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রায় ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে নীতিগত অনিশ্চয়তা, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধীরগতি ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে বাণিজ্যের ওপর ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে আঙ্কটাড সতর্ক করেছে। নিকিতা জানিয়েছেন, মার্কিন কোম্পানিগুলি ৫ এপ্রিল শুল্ক আরোপের আগে পণ্য মজুত করায় আমদানিতে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সেবা বাণিজ্য ছিল এই বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রায় ১.৫ শতাংশ বেড়েছে এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা ২ শতাংশে পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উন্নত অর্থনীতি এই সময়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় ভালো করছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে গ্লোবাল সাউথের প্রবণতাকে পাল্টে দিয়েছে।
এই পরিবর্তনের পেছনে মার্কিন আমদানি ১৪ শতাংশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানি ছয় শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে ভূমিকা রেখেছে, যদিও উন্নয়নশীল দেশে আমদানি দুই শতাংশ কমেছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক আরোপের লক্ষ্য ছিল বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা কমানো, কিন্তু গত চার প্রান্তিকে এই ভারসাম্য সংকট আরও বাড়ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে, আর চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ক্রমবর্ধমান উদ্বৃত্ত অর্জন করছে। ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর নতুন শুল্ক আরোপ বাণিজ্য বিভাজনের ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
তারপরও, আঙ্কটাড জানিয়েছে যে এখনও বৈশ্বিক বাণিজ্যে স্থিতিস্থাপকতার চিহ্ন রয়েছে। তবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নীতিগত স্পষ্টতা, ভূ-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সরবরাহ শৃঙ্খলগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।