ঢাকা | বুধবার | ২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

৬ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ২৭৭৮ জন

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সড়কপথে মোট ১৭ হাজার ৯৫৭টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যেগুলোতে ১৭ হাজার ৮২৬ জন আহত হয়েছেন এবং ২ হাজার ৭৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজধানীর বিজয় মিলনায়তনে শুক্রবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সেভ দ্য রোডের মহাসচিব শান্তা ফারজানা এই তথ্য জানান।

তিনি আরো জানান, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, সিএনজি ও থ্রি-হুইলার যেসব যানবাহনে ৮ হাজার ৮১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে, ফলে ৮ হাজার ৮১৫ জন আহত এবং ৭৯৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৭১৪টি ঘটনা ঘটেছে, এতে ৩ হাজার ৬২৩ জন আহত এবং ৬৭৩ জন নিহত হয়েছেন। বাস দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৪০৪টি দুর্ঘটনা ঘটে, যেখানে ৩ হাজার ৩১৮ জন আহত এবং ৮২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ট্রাক, পিকআপ ও লড়ি দুর্ঘটনায় ২ হাজার ২৭টি ঘটনা ঘটে, এতে ২ হাজার ৭০ জন আহত এবং ৪৮৫ জন নিহত হন।

সেভ দ্য রোডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী ও মহাসচিব শান্তা ফারজানাসহ সংশ্লিষ্ট গবেষণা সেল সদস্যদের তত্ত্বাবধানে ১৭টি জাতীয় দৈনিক, ২২টি নিউজ পোর্টাল এবং স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বেচ্ছাসেবীদের তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী বলেন, প্রতি তিন কিলোমিটারে পুলিশের বুথ বা ওয়াচ টাওয়ার না থাকায় ও হাইওয়ে পুলিশসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পুলিশ প্রশাসনের অবহেলার কারণে সড়কপথে গত ছয় মাসে ১১৮টি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদের হামলায় ১০৪ জন আহত হয়েছেন। পাশাপাশি ৬১৪টি নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা এবং ২টি ধর্ষণের স্থানীয় তথ্য এসেছে, যা অধিকাংশ সময় থানা-পুলিশের নজর এড়িয়ে যায়।

নৌপথে কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশের দায়িত্বে অবহেলার সুযোগে অন্যান্য বছরের তুলনায় ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে। রেলপথে মহাখালীতে দুষ্কৃতিকারীদের ছোড়া ইট-পাটকেল ও ছিনতাইকারীদের হামলায় ৪১ জনসহ মোট ৫৩ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬১৫টি, এতে ৪৫১ জন আহত ও ১৪ জন নিহত হয়েছেন। রেলপথে ৫২৬টি স্থানীয় দুর্ঘটনায় ১৮৪ জন আহত এবং ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আকাশপথে অবস্থা ভালো থাকলেও বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনার ফলে ৩১৬ জন অসুস্থ হয়েছেন।

এই তথ্যগুলো থেকে স্পষ্ট যে, সড়কপথসহ বিভিন্ন মাধ্যমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি। সরকারি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দুর্ঘটনা ও অপরাধের সংখ্যা কমানোর পদক্ষেপ দ্রুত নেওয়া প্রয়োজন।