ঢাকা | মঙ্গলবার | ২৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা সফর, ১৪৪৭ হিজরি

মুরগি ও ডিমের দাম কমলেও চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে

কোরবানি ঈদের পর রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা কমেছে, যা ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি সৃষ্টি করেছে। তবে চালের বাজারে উল্টোদিকের চিত্র দেখা যাচ্ছে; চালের দাম হঠাৎ বেশ খানিকটা বেড়ে গেছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখালে জানা গেছে, খুচরা দরে মোটা চাল (বিআর-২৮, পারিজা) কেজিপ্রতি ৫৮ থেকে ৬২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সরু চালের মধ্যে জিরাশাইল চালের দাম ৭৪ থেকে ৭৮ টাকা, মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮০ টাকা এবং কাটারিভোগ চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা প্রতি কেজি পর্যন্ত উঠেছে।

পুরান ঢাকার নয়াবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী নিজাম জানান, “ঈদের পর থেকে চালের দাম বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এটা মূলত ধানের দাম বৃ্দ্ধির কারণে। বর্তমানে চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই প্রবণতা রয়ে যেতে পারে।”

অলিগলির ছোট মুদি দোকানগুলোতেও চালের দাম কিছুটা বেশি দেখা গেছে। বংশাল এলাকার মুদি দোকানদার মজিদ মিয়া বলেন, “এ ধরনের দোকানে পণ্যের পরিমাণ বেশি থাকায় আমাদের বিনিয়োগও বেশি হয়, তাই সামান্য বাড়তি দরে চাল বিক্রি করতে হয়।”

অন্যদিকে, মুরগি, ডিম ও সবজির দাম কমে ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে। ব্রয়লার মুরগির দাম গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় নেমে এসেছে, যেখানে ঈদের আগে তা ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। ডিমের দামও প্রতি ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় কমেছে। বিক্রেতারা বলেন যে, ঈদের পর ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়ায় ও চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় এই দাম কমেছে।

পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার ও নয়াবাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির দামও কিছুটা কমে প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা রেঞ্জে নামিয়েছে। মাছের বাজারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি; বড় ইলিশসহ অন্যান্য মাছের দাম এখনও তুলনামূলক বেশি রয়েছে।

সবজির বাজারেও দাম প্রায় স্থিতিশীল, কিছু কিছু সবজির দাম আবারও কমছে। পুঁই শাক, বেগুন, পেঁপে, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গে ও মিষ্টি কুমড়ার মতো সবজি প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগে প্রায় ১০ থেকে ৪০ টাকা বেশি ছিল। ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে দাম আরও কিছুটা কম পাওয়া যায়।

বাজারে উপস্থিত কয়েকজন ক্রেতা জানান, কোরবানির ঈদের পরে অনেক পরিবারের মাংসের স্টক থাকার কারণেই মুরগি ও ডিমের চাহিদা কমেছে। তবে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যদি কয়েক দিনের মধ্যে চাহিদা বৃদ্ধি পায়, তবে মুরগির দাম আবারও বাড়তে পারে। সামগ্রিকভাবে ঐতিহ্যবাহী ঈদের পর বাজারে মাংস ও ডিমের দাম কিছুটা কমলেও চালের দাম বৃদ্ধি পেয়ে এতে অনেকে উদ্বিগ্ন।