পরিবেশ দূষণে চরম হুমকিতে জীববৈচিত্র্য। ক্রমেই ধ্বংস হচ্ছে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
বাদ যাচ্ছে না পুকুর কিংবা জলাশয়। প্রকৃতি বিনাশী কর্মকাণ্ডে ধ্বংস হচ্ছে পুকুর ও
জলাশয়ের মাছও।
এমনি বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে পড়েছে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার প্রাণকেন্দ্র ঠাকুর
বাজারের দিঘিটি। দিনে দিনে পরিবেশ দূষণকারী বর্জ্য ফেলায় বিষাক্ত হয়ে পড়েছে
জলাশয়টি, মরে যাচ্ছে মাছ।
শাহরাস্তি পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দিঘির পানিতে ভেসে উঠছে শত শত মরা মাছ।
দুর্গন্ধে আশপাশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর পরিবেশ হয়ে উঠেছে চরম
অস্বাস্থ্যকর—এমনটাই অভিযোগ করেন আশপাশের ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ও শিশুরা।
পড়ুন: সুন্দরবন রক্ষায় বাস্তবিক কর্মপরিকল্পনা করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
স্থানীয় বাসিন্দারা ইউএনবিকে জানায়, ঠাকুর বাজারের পাশে গরু বাজারের জন্য পৌরসভা
কর্তৃপক্ষ দিঘির ২০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করে সেখানে ভরাট কার্যক্রম চালাচ্ছে। কিন্তু
জমি ভরাটের কাজে নিয়মিতই বিভিন্ন স্থান থেকে ময়লা আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে। এসব
বর্জ্যের বিষাক্ততা সরাসরি পানিতে মিশে মাছ ও জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটাচ্ছে। নষ্ট
হচ্ছে পরিবেশ।
দিঘি ইজারাদার ও মৎস্য চাষি অর্জুন চন্দ্র বর্মন ইউএনবিকে জানান, ১৫ মাসের জন্য
ইজারা নিয়ে তিনি বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত দুই-তিন দিনে
দিঘির শত শত মাছ মারা যেতে শুরু করে। এতে করে তার কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে
দাবি করেন তিনি। এ ঘটনায় তিনি পৌর প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন বলে জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা মইনুল ইসলাম ও আবদুল মুনাফ বাচ্চুসহ আরও কয়েকজন ইউএনবিকে বলেন,
‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ময়লার স্তুপ ফেলে ভরাট কার্যক্রম চলায় আমাদের দম বন্ধ হয়ে
যাচ্ছে, দুর্বিষহ পরিবেশের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। ময়লার গন্ধ সহ্য করা যাচ্ছে না, আর
এখন মাছও মরছে।’
এ বিষয়ে শাহরাস্তি পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ শেখ ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা
পৌরসভার নিজস্ব জমি ভরাট করছি। বিষয়টি অবগত হয়েছি, আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয়দের মতে, উন্নয়ন কাজের নামে অপরিকল্পিতভাবে ময়লা ফেলার মাধ্যমে পরিবেশ
বিপর্যয় সৃষ্টি করা হচ্ছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এই দিঘি এক সময় সম্পূর্ণভাবে
অকেজো হয়ে পড়বে এবং এর প্রভাবে হুমকিতে পড়বে জনস্বাস্থ্যও।