ইনিংসের শুরুতে ম্যাক্সওয়েল ছিলেন শান্ত, প্রথম ১৫ বলে করেছেন মাত্র ১১ রান, কোনও বাউন্ডারি ছাড়াই। সাধারণত এই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বলতে আমরা তো বেশ দ্রুতগতির হিটিং আশা করি – তিনি হয়তো শুরুতেই আউট হবেন বা মাত্র ১৫ বলে কমপক্ষে ৩৫-৪০ রান করেই পড়ে থাকবেন, টি-টোয়েন্টির ধরনে এটা স্বাভাবিক।
কিন্তু ‘বিগ শো’ খ্যাত এই কিংবদন্তি শেষমেশ নিজের ক্যারিশমা দেখিয়েই যান। ইনিংসের শেষ ৩৪ বলে তিনি করেছেন অতুলনীয় ১৩টি ছয় এবং ২টি চার। যখন প্রথম চারটি ছক্কা মারলেন, তখন তার ব্যক্তিগত রান ছিল ৭৮। এই ঝড় তুলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আজ মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলসি) ওয়াশিংটন ফ্রিডমের হয়ে নিজের অষ্টম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিটি করেন।
লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে এই সেঞ্চুরি ছিল ম্যাক্সওয়েলের কাছে বিশেষ উৎসবের মতো। শুরুর দিকে অবশ্য চাপে ছিলেন তিনি, কারণ দলের রান যখন ১৩ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৮, তখন ম্যাক্সওয়েলের স্কোর ছিল ১৫ বলে মাত্র ১১। কিন্তু এরপর বাংলরুর মতো রাজসিক ব্যাটিং শুরু করেছিলেন ম্যাক্সওয়েল। স্বদেশি স্পিনার তানভীর সাংহার ওভারে তিন ছয় মারার পরও শেষ করলেন জেসন হোল্ডারের ওভারে দুটি ছক্কা। এই দুই ওভারে দিয়ে দলের রান বেড়ে যায় ২০০ ছাড়িয়ে, ৫ উইকেটে ২০৮।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন ম্যাক্সওয়েল রয়েছেন যৌথভাবে চতুর্থ সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ানের তালিকায়। সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি করেছেন ক্রিস গেইল (২২টি), দ্বিতীয় স্থানে বাবর আজম (১১টি), তৃতীয় স্থান দখল করেছেন রাইলি রুশো ও বিরাট কোহলি (প্রত্যেকে ৯টি), এবং তার পরে রয়েছেন রোহিত শর্মা, মাইকেল ক্লিঙ্গার, ডেভিড ওয়ার্নার, অ্যারন ফিঞ্চ, জশ বাটলার ও ম্যাক্সওয়েল (৮টি করে)।
বিশেষ করে এই দিনটি স্মরণীয় হয়ে ওঠে কারণ গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন ম্যাক্সওয়েলের মা-বাবা। অষ্টম সেঞ্চুরিটি হওয়াতে তাদের উপস্থিতি এই মাইলফলকের মর্যাদা বহুগুণ বাড়িয়েছে। ইনিংস শেষে ম্যাক্সওয়েল বলেন, ‘দারুণ লাগছে। বাড়ির জন্য রান করা খুব একটা হয় না, তাই এমন এক সাফল্য তাদের সামনে তুলে ধরে আমি আত্নতৃপ্ত।’
ওয়াশিংটনের অধিনায়কও ইনিংসের ব্যপারে বলেন, ‘কিছুটা চাপের মুখে আমাদের ব্যাটসম্যানদের ভিন্নরকম মানসিকতায় খেলতে হয়েছিল। শুরু ধীরগতি ছিল, কিন্তু যখন বুঝলাম আরও রান দরকার, তখন উইকেটের বিপরীতে ঝড় তুলতে শুরু করি, আর শটগুলো ফলপ্রসূ হয়। ওই সময় আমাদের আস্তে হয়ে রান করা দরকার ছিল।’
২০৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লস অ্যাঞ্জেলেস নাইট রাইডার্স সর্বশেষ ১১ ওভারে অলআউট হয় ৯৫ রানে, মাত্র ৭ উইকেট হারিয়ে। ফ্রিডমের হয়ে জ্যাক এডওয়ার্ডস ও মিচেল ওয়েনসেরা তিনটি করে উইকেট নেন। এই হার দিয়ে ফ্রিডম দলের ঝুলিতে ১১৩ রানের বড় জয় আসে।