জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) জানিয়েছে, ইসরায়েল অধিকৃত জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরের ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি এলাকায় ব্যাপক জোরপূর্বক ফিলিস্তিনি নাগরিকদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে, জাতিসংঘ এটিকে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ওএইচসিএইচআরের তথ্যমতে, বিশেষ করে দক্ষিণ হেবরনের মাসাফের ইয়াত্তা অঞ্চল থেকে প্রায় ১২০০ ফিলিস্তিনি নাগরিককে জোরপূর্বক স্থানান্তরিত করার আশঙ্কা রয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক প্রশাসন ওই এলাকায় ফিলিস্তিনিদের সব ধরনের নির্মাণ কার্যক্রম ও পরিকল্পনা নিষিদ্ধ করেছে এবং জানিয়েছে, এই এলাকা সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হবে।
গত কয়েক মাসে মাসাফের ইয়াত্তা অঞ্চলে ইসরায়েল ব্যাপক বাড়িঘর ধ্বংস, ফিলিস্তিনি নাগরিক ও মানবাধিকারকর্মীদের নির্বিচার গ্রেপ্তার ও নির্যাতন চালিয়েছে। এছাড়াও, চলাচলে কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের বাধ্যতামূলকভাবে উচ্ছেদ করা হচ্ছে।
তবে এখানে বসবাসরত অবৈধ ইহুদি বসতি থেকে আসা দখলদাররাও ফিলিস্তিনি নারী, শিশু ও প্রবীণদের ওপর নিয়মিত হামলা ও হয়রানি চালিয়ে তাদের স্থানীয় এলাকা থেকে চলে যেতে বাধ্য করছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। তিনি এই সহায়তাকে ‘সম্পূর্ণ লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, হামাস গাজায় খাদ্য ও পণ্যের নিয়ন্ত্রণ করছে, তাই সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ করলে দ্রুত বিজয় লাভ সম্ভব।
বেন-গভিরের মতো কট্টর ডানপন্থি নেতারা গাজায় সহায়তা পাঠানোর বিরোধিতা করছে, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক বিপর্যয় এড়াতে সহায়তা অব্যাহত রাখার আওয়াজ তুলছে।
ফিলিস্তিন সংকটে দীর্ঘদিন ধরেই কোনো ন্যূনতম অগ্রগতি হয়নি, যদিও ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ শিথিল হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৯০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে মোট ৫৬ হাজার ১৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন আহত বা পঙ্গুত্বগ্রস্ত হয়েছেন।