শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ী সীমান্ত এলাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে আবারো একটি বন্যহাতির মৃত্যু ঘটেছে। এই ঘটনা বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের অধীনে ঘটেছে। স্থানীয়দের খবর পেয়ে শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বনবিভাগের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করেন।
বনবিভাগ নিশ্চিত করেছে যে, খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নিচে নেমে আসা ওই হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়েই প্রাণ হারিয়েছে। মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জার দেওয়ান আলী জানান, মৃত হাতিটির শরীরে পোড়া ক্ষতের দাগ রয়েছে এবং তার বয়স প্রায় ১৫ থেকে ২০ বছর হতে পারে। এটি একটি মাদি হাতি। বনবিভাগ এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে মধুটিলা রেঞ্জের আশপাশে খাদ্যের জন্য বন্যহাতিদের লোকালয়ে নামার ঘটনা বেড়ে গেছে। যেখানে ফসল হাসিল কম হওয়ার কারণে হাতির দল বাড়িঘরেও প্রবেশ করছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বড় সমস্যা সৃষ্টি করছে। যদিও হাতিটি যেখানে মারা গেছে সেখানে সরাসরি কোনো বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ছিল না, তবে হাতিপাগাড় ক্যাম্পের আশপাশে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা রয়েছে।
গত চার মাসের মধ্যে মধুটিলা রেঞ্জে এটাই তৃতীয় বন্যহাতির মৃত্যু। এর আগে, মার্চ মাসে পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের লালনেংগড় এলাকায় আর দুই মাস আগে মতিদের পাহাড় থেকে একটি সদ্যোজাত হাতিশাবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
বন্যহাতির এই প্রাকৃতিক দুর্দশায় পরিবেশ ও প্রকৃতি প্রেমীরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। অধিকারকর্মী নদীরঞ্জন কোচ তার ফেসবুক পেজে মৃত হাতিটির ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আবারো বন্যহাতির মৃত্যু। এর শেষ কোথায়? হাতি ও মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে সরকারি উদ্যোগ কি যথেষ্ট? শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণ প্রদানের মাধ্যমেই কি এই সমস্যা মিটে যাবে? সহাবস্থানের পথ খুঁজতে না খুঁজতেই এশীয় হাতির অস্তিত্ব ঝুঁকির মুখে পড়বে।’
বন্যপ্রাণী ও মানুষের সংঘর্ষ এভাবে চললে পরিবেশের ভারসাম্য ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ কঠিন হয়ে উঠবে। এই সমস্যার দ্রুত সমাধানে প্রয়োজন কার্যকর এবং টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণের।