ঢাকা | মঙ্গলবার | ২২শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

বেনাপোলে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার গ্রেফতার

যশোরের বেনাপোল বন্দর এলাকা থেকে ২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ এক ভারতীয় ট্রাক চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বেনাপোল পোর্ট থানায় পাসপোর্ট আইনে মামলা তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দালালদের মাধ্যমে এই পাসপোর্টগুলি ভারতে পাঠানো হয়েছিল। পাসপোর্টগুলোতে গত ২৪ জুন সার্বিয়ার ভিসা লাগানো হয়। পরে, বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) ভারতীয় ট্রাক চালক বেচারাম পরামানিকের মাধ্যমে এসব পাসপোর্ট বেনাপোল চেকপোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসছিল। একই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেনাপোল বন্দরে দায়িত্বে থাকা আনসাররা তাকে পাসপোর্টগুলোসহ আটক করে।

বেনাপোল বন্দরের আনসার কমান্ডার হেলালউজ্জামান জানান, ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাঠানো হচ্ছে— এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তারা আগে থেকেই সতর্ক ছিলেন। বেচারাম পরামানিক যখন একটি ব্যাগ হাতে কার্গো ভেহিকল টার্মিনাল থেকে বের হতে চেষ্টা করেন, তখন তার ব্যাগ তল্লাশি করা হলে ২০টি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। পরে ওই পাসপোর্ট এবং বেচারামকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।

পাসপোর্ট আটক হওয়ার খবর পেয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং তদন্ত শুরু করেন। তারা বোঝার চেষ্টা করেন যে, কোনোভাবেই এই ভিসাগুলি ব্যবহার করে রাজনৈতিক নেতারা ইউরোপের কোনো দেশে পালানোর চেষ্টার সাথে সম্পর্কিত কি না।

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল মিয়া জানান, ইউরোপের অনেক দেশের ভিসা সরাসরি বাংলাদেশ থেকে পাওয়া যায় না, তাই ভারত থেকে ভিসা নিতে হয়। কিন্তু ভারতের ভিসা না পাওয়ায় অনেকে দালালের মাধ্যমে তাদের পাসপোর্ট ভারতে পাঠিয়ে ভিসা করিয়ে নিয়ে আসছেন। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পাসপোর্টগুলোর মালিকরা শ্রমিক হিসেবে ইউরোপের কোনো দেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভিসা করিয়েছেন। যেকোন কারণেই হোক, পাসপোর্ট অন্যের মাধ্যমে অন্য দেশে পাঠিয়ে ভিসা করানো বেআইনী, এজন্য এই বিষয়ে পাসপোর্ট আইনে মামলা করা হয়েছে।

আটক হওয়া ২০টি পাসপোর্টের মালিকদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার দানেশ আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম, গাজীপুরের আব্দুর রশিদের ছেলে আবুল হোসেন, মানিকগঞ্জের আবুল কাশেমের ছেলে শরিফুল ইসলাম, নোয়াখালীর আব্দুল মোতালেবের ছেলে আব্দুল কাদের, আলাউদ্দীনের ছেলে আব্দুল আজিজ, সাহেব উদ্দীনের ছেলে আব্দুর রহিম, অমল চন্দ্র দাসের ছেলে রুপম চন্দ্র দাস, সাতক্ষীরার রেজাউল ইসলামের ছেলে তানভীর হাসান, নজরুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেনের ছেলে পলাশ হোসেন, নূর মোহাম্মদ শেখের ছেলে জাকারিয়া, ইউনুচের ছেলে আবু সাঈদ, ফেনির মোরশেদ আলমের ছেলে আব্দুল করিম, নরসিংদীর বাতেন মিয়ার ছেলে ফাইম মিয়া, চাঁদপুরের মনোহর গাজীর ছেলে মোজাম্মেল হোসেন, নোয়াখালীর রফিউল্লাহর ছেলে ইমরান হোসেন, কিশোরগঞ্জের রিপন মিয়ার ছেলে অপূর্ব মিয়া, ঢাকার আব্দুল মজিদের ছেলে ফয়সাল আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাজি আব্দুল মান্নানের ছেলে ইসহাক এবং সাতক্ষীরার খলিল গাজীর ছেলে হুমায়ুন কবীর।