ঢাকা | সোমবার | ২১শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বৃদ্ধি পেয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য: জাতিসংঘের প্রতিবেদন

জাতিসংঘের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বিশ্ব বাণিজ্য প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানির উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। জেনেভা থেকে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আঙ্কটাড)-এর অর্থনীতিবিদ আলেসান্দ্রো নিকিতা জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের ফলে শুরু হওয়া বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যেও ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধের তুলনায় ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক বাণিজ্যে ১.৭ শতাংশের উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।

তবে প্রতিবেদনে সতর্কতা প্রদান করা হয়েছে যে নীতিগত অনিশ্চয়তা, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বিশ্ব অর্থনীতির ধীরগতি ভবিষ্যতে বাণিজ্যের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। নিকিতা উল্লেখ করেন, মার্কিন কোম্পানিগুলো শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে পণ্য মজুত করে রাখায় আমদানিতে এই বড় ধরনের বৃদ্ধি ঘটেছে।

আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সেবা বাণিজ্য ছিল প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি। ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্ব বাণিজ্য প্রায় ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২ শতাংশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। উন্নত অর্থনীতিগুলো উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় এই সময়ে ভালো পারফরম্যান্স করেছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে গ্লোবাল সাউথের পক্ষে থাকা প্রবণতাকে দ্বিমুখী করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিতে ১৪ শতাংশ আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের রপ্তানিতে ৬ শতাংশ বৃদ্ধি এই পরিস্থিতির মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যেখানে উন্নয়নশীল দেশগুলোর আমদানি দুই শতাংশ কমেছে।

রিপোর্টে আরও আলোচনা করা হয়েছে, ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের ফলে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা আরও গভীর হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়িক ঘাটতি বাড়েছে, আর চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্বৃত্ত বেড়েছে। বিশেষ করে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর নতুন শুল্ক আরোপের কারণে বাণিজ্যে বিভাজনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

তবুও, আঙ্কটাড বিশ্বাস করে যে বিশ্ব বাণিজ্যে এখনও স্থিতিস্থাপকতা রয়ে গেছে। ভবিষ্যতে বাণিজ্যের পথ নির্ধারণ করবে নীতিগত স্পষ্টতা, ভূ-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরবরাহ শৃঙ্খল সামঞ্জস্য রক্ষা করার দক্ষতা। এই সবেই নির্ভর করবে বিশ্ব বাণিজ্যের গতিপথ।