ঢাকা | রবিবার | ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

দেবিদ্বার স্কুলে আ.লীগ নেতাকে সভাপতি করার পর এলাকাবাসির মাঝে ক্ষোভ

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বড় শালঘর ইউএমএ উচ্চ বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে নিয়োগ করায় স্কুলের অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনা দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় এই পদে তাকে বসানো হয়েছেন বলে আরও নেতিবাচক মন্তব্য শোনা যাচ্ছে।

সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আওয়ালের ছোট ভাই মাসুদুর রহমানকে এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে। এলাকাবাসি মনে করছেন, যিনি বিগত কয়েক বছরে বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতি এবং অভিযোগে জড়িত ছিলেন, তাকে এমন নামিদামি স্কুলের সভাপতি করা দুঃখজনক ও আশঙ্কাজনক।

তদন্তে জানা গেছে, মাসুদুর রহমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনে বাধা দিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। এছাড়াও তিনি বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগেও যুক্ত ছিলেন। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সহায়তায় তাকে সভাপতি করা হয়, যা নিয়ে অনেকের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয় একজন বিএনপি নেতা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, জানিয়েছেন যে, বেলজিয়াম বিএনপির সভাপতি সাইদুর রহমান লিটন আওয়ামী লীগ ঘেঁষা কিছু ব্যক্তিদের কমিটিতে বসলেই দলীয় আদর্শ ও ত্যাগীদের অবমাননা হচ্ছে। তিনি এই ঘটনার কঠোর প্রতিবাদ করবার পাশাপাশি আশা প্রকাশ করেছেন যে দলের উচ্চ পর্যায় এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

সূত্রের আরও খবর, মাসুদুর রহমান তার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে জেলার সৈয়দপুর কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যাক্ষ পদে ইসমাইল নামের এক দুর্নীতিপর শিক্ষক নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। তবে তৎকালীন অধ্যক্ষ সাহসের সঙ্গে তা প্রত্যাখ্যান করেন।

অন্যদিকে, কমিটির সভাপতি পদে মাসুদুর রহমানকে নিয়ম মেনে মনোনীত করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ ও বিএনপির স্বার্থভিত্তিক কোনো রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ নেই বলে একদল শিক্ষক জানিয়েছেন।

মহিলা ইউএমএ স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু ইউসুফ বলেছেন, তিনি কারো নাম উল্লেখ করেননি এবং কমিটির নাম সর্বসম্মতভাবে চূড়ান্ত করে কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। সেই কমিটি থেকে মাসুদুর রহমান সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. জাকির হোসেন, যিনি স্কুল গভর্নিং বডির সভাপতি পদপ্রার্থীও ছিলেন, বলেন, ‘আমার নাম সর্বসম্মতিক্রমে প্রথম স্থানে ছিল যা ইউএনও’র মাধ্যমে ডিসি বরাবর প্রেরণ হয়। তবে পরের দিন হঠাৎ করে আমার নাম দ্বিতীয় অবস্থানে নামানো হয় এবং জেলা অফিস থেকে স্কুলে সংশোধিত চিঠি পাঠানো হয়। মাসুদুর রহমানের নাম প্রথম অবস্থানে থাকলেও পরে পরিবর্তন করা হয়েছিল, যা দেখে আমি হতাশ হই। পরে জানতে পারি, খুব দ্রুত সময়ে বোর্ড তার অনুমোদন দিয়েছে।’

এই ঘটনায় পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসি এবং অনেক অভিভাবক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এবং বিষয়টির যথাযথ তদন্ত ও সমাধানের জন্য দাবি জানিয়েছেন।