ঢাকা | রবিবার | ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ট্রাম্পের ঘোষণা: কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক, ১ আগস্ট থেকে কার্যকর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। বৃহস্পতিবার তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানান।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানিয়েছে, চলতি বাণিজ্যযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের প্রতি এ ধরনের ২০টিরও বেশি চিঠি পাঠিয়েছেন। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে, যার লক্ষ্য আগামী ২১ জুলাইর মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছানো। তবে ট্রাম্পের এ নতুন শুল্ক হুমকি আলোচনার ভবিষ্যত অনিশ্চিত করে তুলেছে।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ কানাডা ও মেক্সিকোকে সন্তুষ্ট করার প্রচেষ্টার মধ্যে পড়ে, যাতে তিন দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মুক্তবাণিজ্য চুক্তি ইউএসএমসিএ আবার সঠিক পথে ফিরে আসে। ২০২০ সালে পুরনো নাফটা চুক্তির জায়গায় ইউএসএমসিএ চালু করা হয়েছিল, যা ২০২৬ সালে পর্যালোচনা করার কথা। তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে বহুল শুল্ক আরোপের কারণে এই প্রক্রিয়া বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে।

প্রথম দফায় যুক্তরাষ্ট্র কানাডা ও মেক্সিকোর অনেক পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল, যদিও কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দেয়া হয়। ট্রাম্প অভিযুক্ত করেছেন যে এই প্রতিবেশী দেশগুলি অবৈধ অভিবাসন ও মাদকপাচার বন্ধে যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছেন না।

চিঠিটি এমন এক সময়ে পাঠানো হলো, যখন ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে সখ্য কিছুটা উন্নতি পেয়েছিল। ইংরেজি সংবাদ অনুযায়ী, ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানোর বিষয়েও মজা করে মন্তব্য করেছিলেন।

৬ মে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং তার পরের মাসে জি-৭ সম্মেলনে দুই নেতার আরও এক বৈঠক হয়। সেখানে বিশ্বনেতারা ট্রাম্পকে বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। পাশাপাশি, কানাডার পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা আলোচনা চালুর পথ খুলে দেয়।

অন্যদিকে, এনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, যেসব দেশ এখনো চিঠি পায়নি, তাদের ওপরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ব্যাপার বিবেচনায় রয়েছে, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। ব্রাজিলের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণের কথা জানিয়েছেন তিনি, তবে আগে কোনও সমঝোতা হলে এ শুল্ক আরোপ হবে না।

ট্রাম্পের এই ঘোষণা দেয়ার পর ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী, তবে দেশ পাল্টা ব্যবস্থা নেবার কথাও বিবেচনা করছে। চিঠিতে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর প্রতি ট্রাম্পের বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।