অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাবিত সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে এবং দেশের রাষ্ট্রসংস্কারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমন্বয়পূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্দেশ্যে আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভায় মিলিত হয়েছে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফার এই দ্বাদশ দিনের সভাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, প্রধান বিচারপতির নিয়োগ প্রক্রিয়া এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণাসহ তিনটি বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আগের আলোচনায় যেসব বিষয়ে সমাধান হয়নি, সেগুলো নিয়েও আজ আরও গভীর ও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। তিনি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের হিসেবে আপনাদের প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট মওজুদ এবং অবস্থান থাকাটা স্বাভাবিক। তবে আমাদের সকলের উচিত হল মতপার্থক্য কমিয়ে একটি সম্মিলিত জায়গায় আসা, যেন আগামীতে জনগণের প্রতিরূপ হয়ে সঠিক প্রতিনিধিত্ব প্রদান করা যায়।’’
অধ্যাপক রীয়াজ আরও বলেন, ‘‘আমরা সবাই চাই একটি ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হোক। এটি না হলে দেশ ও বর্তমান পরিস্থিতির অবনতি হতে বাধ্য। তাই সবাইকে কিছুটা ছাড় দিয়ে ও নিজের অবস্থান সামঞ্জস্য করে ঐকতানে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’’
আজকের আলোচনায় দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো, যেমন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
আগের বৈঠকগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের জন্য স্বতন্ত্র কমিটি গঠনসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যা আজকের সভাতেও প্রভাব ফেলেছে।
সভা শেষে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা সংক্ষিপ্ত ব্রিফিং প্রদান করবেন বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। এই আলোচনার লক্ষ্য দেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কারে এক নতুন মাত্রা যোগ করা এবং একটি সুষ্ঠু, স্থায়ী ও জনগণের মর্জিমতো রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠন সম্ভব করা।