দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদগুলোর দ্রুত পূরণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১৫ জুলাই) বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন।
বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান সম্পর্কে জানতে চান এবং কোন স্কুলগুলো ভালো করছে সে বিষয়ে মূল্যায়ন চেয়েছেন।
উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় জানান, ‘শিক্ষাখাতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য অনেক অর্থ ব্যয় হয়েছে, কিন্তু শিক্ষার মান বৃদ্ধি এমন মূল উদ্দেশ্য এখনও পূরণ হয়নি। আমরা স্কুলগুলোর র্যাংকিং করে যাচ্ছি এবং পিছিয়ে থাকা স্কুলগুলোর জন্য বিশেষ কর্মসূচি নিচ্ছি।’
মূল্যায়নে দেখা গেছে, যেসব বিদ্যালয়ের মান ভালো, সেগুলোতে প্রধান শিক্ষকের যোগ্যতা, সহকর্মীদের সঙ্গে তার সম্পর্ক ও আচার-ব্যবহার বড় ভুমিকা পালন করে। বর্তমানে দেশের প্রায় ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা আরও নির্দেশ দেন, প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ও বছরের পর বছর শিক্ষকতা করে আসা শিক্ষকদের প্রাধান্য দিতে হবে। পাশাপাশি তরুণদেরও প্রধান শিক্ষক হিসেবে সুযোগ দিতে হবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) এর সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন অধ্যাপক ইউনূস। এছাড়া শিক্ষকদের বদলির নীতিমालায় পরিবর্তন আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়েছে নির্দেশনা।
তিনি বলেন, ‘অনেকে বদলির জন্য নানা তদবির করেন, তাই বদলির ক্ষেত্রে একটি স্পষ্ট নীতিমালা ও প্রক্রিয়া থাকা জরুরি। শুধুমাত্র সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই বদলি সম্ভব হবে।’
তার পাশাপাশি, প্রধান উপদেষ্টা স্কুলগুলোতে মেয়েদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নারীবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘স্কুলের ভবন নির্মাণ কমিটিতে অন্তত একজন নারী স্থপতি থাকতে হবে, যাতে নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। মেয়েদের জন্য পরিকল্পনা, চিন্তা ও বাস্তবায়নে আলাদা গুরুত্ব দিতে হবে।’
অবশেষে, দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধারাবাহিকভাবে ইন্টারনেট সংযোগ ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরির বিষয়েও অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গুরুত্বারোপ করেন।