ঢাকা | শুক্রবার | ১৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

সকালের মনোরম আবহাওয়ার মাঝেও দূষণ নিয়ে মাথা ব্যথায় ঢাকার বাতাস

ঢাকার সকালটি মেঘলা ও মনোরম ছিল, বাতাসও ঠান্ডা ও মৃদু। এমন সুন্দর আবহাওয়ায় বায়ুমানের উন্নতি হওয়ার প্রত্যাশা ছিল। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, আজকের পরিবেশগত পরিস্থিতি ঢাকার জন্য মোটেই ভালো নয়। মাকাল ফলের সেই প্রবাদটা যেন আজকের ঢাকার পরিস্থিতির কথাই বলে—উপর দিয়ে সুন্দর হলেও ভিতরে শূন্যতা।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর বায়ুদূষণের মান পরিমাপকারী একিউআই স্কোর দেখা গেছে ৮৯, যা ‘মাঝারি’ পর্যায়ে থাকলেও গতকালের তুলনায় অনেক বেশি। এই স্কোরের কারণে ঢাকা এখন বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ১৪তম স্থানে রয়েছে। তুলনায় গতকাল সকাল ৯টায় ঢাকার একিউআই ছিল মাত্র ৫৪, যা শহরকে ৬৪তম স্থানে নিয়ে গিয়েছিল।

বায়ুমানের এই পরিবর্তন রাজধানীবাসীর জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ গতকাল বায়ুমানের অবস্থা ‘ভালো’র কাছাকাছি ছিল, কিন্তু আজ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে বয়স্ক, শিশু ও ফুসফুসের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য আজকের এই অবস্থান স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ।

একিউআই স্কোর ০-৫০ হলে পরিবেশ ‘ভালো’, ৫১-১০০ হলে ‘মাঝারি’, ১০১-১৫০ হলে ‘সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর’, ১৫১-২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১-৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০০-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়।

আজও বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা, যার একিউআই স্কোর ১৯৪। চিলির সান্তিয়াগো ও ভিয়েতনামের হ্যানয় যথাক্রমে ১৭১ ও ১৭০ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

ঢাকায় বায়ুদূষণের মূল কারণ হিসেবে পাঁচ ধরনের দূষণ নির্ধারণ করা হয়—বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড ও ওজোন। দীর্ঘদিন যাবত শীতকালে ঢাকার বায়ুমান সবচেয়ে খারাপ হয়, তবে বর্ষাকালে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মৃত্যু বরণ করে, যেখানে প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ। তাই ঢাকাবাসীর জন্য দীর্ঘসময় পরিবেশ দূষিত অবস্থায় সর্বোচ্চ সচেতন থাকার প্রয়োজন।