ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল এবং নাজিরাবাজার মাতৃসদনে সার্বক্ষণিক মিডওয়াইফারি-নেতৃত্বাধীন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য (এসআরএইচ) সেবা শুরু হয়েছে। এ সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন কমিয়ে নগরীর প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন এবং ঢাকা শহরের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সহজ ও মানসম্মত মাতৃসেবা প্রদান করা।
এই প্রকল্পটি জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ), সুইডিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা (সিডা), জাইপাইগো বাংলাদেশ এবং ডিএসসিসির যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হয়েছে। পুরান ঢাকায় প্রায় ৮ লাখ মানুষের জন্য এই সার্বক্ষণিক মাতৃসেবা নিশ্চিত হবে। ইউএনএফপিএ এবং জাইপাইগোর সহায়তায় প্রশিক্ষিত ধাত্রী ও চিকিৎসকরা প্রধানত স্বাভাবিক প্রসবকে অগ্রাধিকার দেবেন এবং সেবার ৯০% অংশ প্রদান করবেন। এর ফলে মা, নবজাতক এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমবে, সচেতনতা বাড়বে এবং সরকারি স্বাস্থ্যসেবার প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, “বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে বেশ কিছু জায়গায় শুধুমাত্র মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান সেকশন বাধ্যতামূলক করা হয়, যা মা ও নবজাতকের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর। এতে সমগ্র জাতি বড় আকারের স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়েছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে এই ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যার সফল সমাধান আশা করছি। ভবিষ্যতে ডিএসসিসির সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মিডওয়াইফারি সেবা চালু করা হবে।”
ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্যাথরিন ব্রিন কামকং বলেন, “মিডওয়াইফারি-নেতৃত্বাধীন সেবা শুধুমাত্র চিকিৎসার বিষয় নয়, এটি নারীর ক্ষমতায়ন এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীন, ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর, সিডা, ইউএনএফপিএ, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং দেশী-বিদেশি এনজিও প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।