গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকা শপিংয়ের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা প্রায় ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
ক্রোককৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস. এম. ডি. জসীম উদ্দিন চিশতীর নামে রাজধানীর বনানী মডেল টাউনের ৩ ও ২/এ নম্বর রোডে অবস্থিত ১৪ নম্বর প্লটে নির্মিত একটি বহুতল ভবন, যার আয়তন ৫ কাঠা জমি এবং বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
এছাড়া, মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে গাজীপুরের কাশিমপুর পূর্ব বাগাবাড়ী এলাকায় ৪১ শতাংশ জমি ক্রোক করা হয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ১২ কোটি টাকা।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার আল মামুনের আবেদন মোতাবেক গত ১৬ জুন ঢাকার সিনিয়ার স্পেশাল জজ আদালত এই সম্পত্তিগুলোর ওপর ক্রোকাদেশ প্রদান করেন।
তবে, বর্তমানে আসামিরা সবাই দেশের বাইরে অবস্থান করলেও, তারা আত্মসাৎ করা অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করেছে বলে সিআইডি তদন্তে জানতে পেরেছে।
প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহক ও সেলারদের প্রলোভনে ফেলে স্বল্পমূল্যে পণ্য সরবরাহের নাম করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। নিজেদের নামে কোনো ব্যাংক হিসাব না থাকলেও, তারা ইনভারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের হিসাব ব্যবহার করে লেনদেন পরিচালনা করত।
সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি হিসাব বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সেখানে ধামাকা শপিংয়ের ব্যবসায়িক লেনদেন হয়েছে প্রায় ৫৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা, অথচ ২০২১ সালের ২৭ জুন হিসাবটিতে মাত্র ৯৩ হাজার ৭৩১ টাকা ছিল, যা স্পষ্টতই আর্থিক জালিয়াতির প্রমাণ বহন করে।
সিআইডির তদন্তে আরও প্রকাশ পেয়েছে, আত্মসাৎকৃত অর্থ ধামাকা শপিংয়ের এমডি জসিম উদ্দিন চিশতীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। পাশাপাশি, মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজের অ্যাকাউন্টেও এসব অর্থ অবৈধভাবে হস্তান্তর করা হয়, যা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের সঙ্গে জড়িত।