এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দল দ্বিতীয় জয় পরাশীল করেছে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে মিয়ানমারের চেয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা দলটি এবার মিয়ানমারকে পরাজিত করল তাদের নিজ গৃহে।
ইয়াঙ্গুনের থুউন্না স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের প্রথমার্ধেই ঋতুপর্ণা চাকমার দুর্দান্ত গোলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর ৭১ মিনিটে সশক্ত এক শটের মাধ্যমে সেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ঋতুপর্ণা নিজেই। যদিও ম্যাচের শেষদিকে মিয়ানমার একটি গোল শোধ করলেও বাংলাদেশের জয় অক্ষুণ্ণ রইল। ২-১ গোলে জয়ে বাংলাদেশ দল এশিয়ান কাপের মূল টুর্নামেন্টে পৌঁছানোর পথে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করল।
৫ জুলাই অনুষ্ঠিত গ্রুপ পর্বের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে খেলবে। ঐ ম্যাচে বাংলাদেশ হারেনি বা ড্র করলে প্রথমবারের মত এশিয়ান কাপের ফাইনাল পর্যায়ে পৌঁছে যাবে পিটার বাটলারের নেতৃত্বাধীন দল।
ম্যাচ শুরুর প্রথম থেকেই মিয়ানমারের ঘরের মাঠের দর্শকদের উৎসাহময় উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। গ্যালারিকে ধ্বনিময় করতে থাকে সক্রিয় বাহলি। তবুও এই চাপ থেকে পিছিয়ে যায়নি বাংলাদেশের সোনালী ফুটবলাররা। ১৮ মিনিটের মাথায় ঋতুপর্ণার নিখুঁত ফ্রি-কিক গোলে পুরো স্টেডিয়াম স্তব্ধ হয়ে যায় এবং বাংলাদেশ প্রথমার্ধে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
প্রথমার্ধে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের আক্রমণের বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে লড়াই করেছে, যদিও সময়ে সময়ে কিছুটা এলোমেলো রক্ষণভাগের কারণে বিপদেও পড়ে। মিয়ানমার কিছু মাত্র আক্রমণ চালিয়েছিল, কিন্তু রুপনা চাকমার দুর্দান্ত সেভে তা প্রতিহত হয়। ১৮ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে লিড পেয়ে আক্রমণের গতি বাড়ায় বাংলাদেশ। মিয়ানমার হলেও সমতায় ফিরতে মরিয়া ছিল, তবে প্রথমার্ধে গোল করতে পারেনি।
বিরতির পর মিয়ানমার বেশ কিছু আক্রমণ চালায়, কিন্তু বাংলাদেশি ডিফেন্ডারদের কঠোর বিপক্ষের কারণে গোলের আশায় সফল হয়নি তারা। ৭১ মিনিটে আবারো নিজের চমৎকার এক ব্যক্তিগত কৌশল দেখিয়ে গোল করেন ঋতুপর্ণা, যা দলের সুবিধা দ্বিগুণ করে।
শেষের দিকে ৮৯ মিনিটে মিয়ানমার একটি গোল শোধ করলেও ম্যাচে বাংলাদেশের শক্ত অবস্থান সমান থাকে এবং তারা জয় তুলে নেয় ২-১ গোলে।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ দলের খেলার মান এবং আত্মবিশ্বাস আরও বাড়েছে। এখন তারা আগামী ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে, যেখানে সফলতা পেলে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে প্রথমবারের মতো স্থান করে নেবে। বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের এই সাফল্যে দেশবাসীর প্রত্যাশা ও উৎসাহ তুঙ্গে উঠেছে।