ঢাকা | রবিবার | ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শার্শায় তুঙ্গে রাজনৈতিক উত্তাপ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যশোর-১ শার্শা আসনে রাজনৈতিক উত্তাপ দিন দিন বেড়েই চলছে। দীর্ঘদিন পর ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ ও আগ্রহ ব্যাপক। এই আসনে বিএনপির চার মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী সক্রিয় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমাবেশ, মিছিল এবং মিটিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী জনমত তৈরি করছেন, পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনী মাঠ সম্পূর্ণ বিএনপির দখলে থাকলেও দলীয় স্বার্থে সকল প্রার্থীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রত্যেকেই দলের বিজয়ী করতে প্রতিদিন শার্শার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী প্রকাশ্যে মিছিল বা মিটিং না করলেও বিভিন্ন মাদ্রাসায় ঘরোয়াভাবে বৈঠক ও সদস্য সংগ্রহে ব্যস্ত। তাদের নির্বাচনকে সফল করার লক্ষ্যে নেতাকর্মীরা তৎপর রয়েছেন।

যশোর-১ শার্শা আসনে ১১টি ইউনিয়নে মোট ১০২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ২৯৯২৮০ জন, যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫০৪৪০ এবং নারী ভোটার ১৪৮৮৮৩ জন।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছে সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি, যিনি ১৭ বছর ধরে দলের জন্য সংগ্রাম করছেন এবং বিভিন্ন মামলা এবং জেল খেটেও দল ছাড়েননি। মফিকুল হাসান তৃপ্তি নির্বাচনী প্রচারণা হিসেবে প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে মিছিল, মিটিং এবং পথসভা করছেন।

শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ নুরুজ্জামান লিটনও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে শক্তিশালী প্রার্থী। তিনি দলের প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত, গত সরকারের আমলে বিভিন্ন হামলার শিকার হলেও দলের নেতৃত্বে অবিচল থেকেছেন। ঊর্ধ্বে ব্যপক জনপ্রিয়তার কারণে বেনাপোলসহ পুরো শার্শা এলাকায় তাকে বিএনপির সর্বসম্মতিক্রমে প্রার্থী হিসেবে চাওয়া হচ্ছে।

অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ খাইরুজ্জামান মধু, যিনি সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিত এবং দীর্ঘ ১৭ বছর জেলবন্দি ছিলেন, দল ও জনগণের কাছে জনপ্রিয়তার সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

এছাড়া সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি আবুল হাসান জহির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি বহু মামলা-মোকদ্দমার মোকাবিলা করে দলের প্রতি অনুগত থাকায় দলের শক্তিশালী কন্ঠ বলে বিবেচিত।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা আজীজুর রহমান দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে ধর্মীয় ও সামাজিক আসরে অংশ নিয়ে দলের সমর্থন বাড়ানোর কাজে ব্যস্ত। সকালের সময় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে ফরম পূরণ করে নতুন সদস্য সংগ্রহ চলছে।

সব মিলিয়ে যশোর-১ শার্শা আসনের নির্বাচনী মাঠে মূলত বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর অংশগ্রহণ দৃশ্যমান। অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের সক্রিয় উপস্থিতি নেই।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জানিয়েছেন, দলের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন এবং দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে সক্রিয়ভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন। দলীয় কোনো বিদ্বেষ বা কোন্দল নেই এবং সবাই দলীয় স্বার্থে পরস্পরের পাশে থেকে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।