ঢাকা | রবিবার | ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংসের জন্য পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে একটি স্পষ্ট ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি জানান, বর্তমানে যে অপপ্রচার চলছে, তার পেছনে চিকিৎসিত ষড়যন্ত্র কাজ করছে, যার লক্ষ্য বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা। এই ষড়যন্ত্রের মূল প্রতিপক্ষ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, যিনি রাজনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময় হিসেবে দেখা দিচ্ছেন এবং তাকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য কুৎসা ও অপবাদ চালানো হচ্ছে।

আজ রোববার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর লিখিত নতুন একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের সময় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। তিনি বিএনপির বিরুদ্ধে সাইবার আক্রমণের অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের ওপর প্রতিবেশী নানা দিক থেকে সাইবার আক্রমণ পরিচালিত হয়েছে। এটি পরিকল্পিতভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এবং দলের নেতাদের প্রতিবেশ থেকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রণীত। বিশেষ করে এইবার প্রথমবারের মতো আমাদের নেতা তারেক রহমানের ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানো হয়েছে, যাকে বিভিন্ন রকম অপবাদ দিয়ে মেলাইন করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে গণমাধ্যমের চিত্র নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে এবং সোশ্যাল মিডিয়া মানুষের মনোভাব ও মূল্যবোধে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। তাই তিনি দলের নেতা-কর্মীদের ‘সাইবার যুদ্ধের’ জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। তরুণদের সামনে এগিয়ে এসে অপপ্রচারের জবাব দেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। তাদের কাছ থেকে দ্রুত এবং কার্যকর প্রতিক্রিয়া দরকার।’

তিনি আরো যোগ করেন, ‘বিএনপিকে এত সহজে ধ্বংস করা যাবে না। বিএনপি প্রতিবাদ করার যোগ্যতা রাখে এবং ইতিহাস প্রমাণ করেছে যে দল ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে দাঁড়াতে পারে।’

বাঙালি জনগণের নেতা ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের গুণাবলী নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর থেকে আমি তারেক রহমানের সঙ্গে সরাসরি কাজ করছি। আমি দেখেছি তার অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা, যা খুব কম রাজনীতিবিদেই দেখা যায়। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বিশাল জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে ফেলেছেন এবং দেশের গ্রামাঞ্চলেও নিজের উপস্থিতি প্রতিষ্ঠিত করেছেন।’

অনুষ্ঠানে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, এবং বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ।

অনুষ্ঠানে ‘তারেক রহমান: দ্য হোপ অব বাংলাদেশ’ নামক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়, যা ‘জেড ম্যান প্রোডাকশন’ প্রকাশ করেছে। ৩২৩ পৃষ্ঠার এই বইয়ের সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান, নির্বাহী সম্পাদক আব্দুর রহমান নূর, সহসম্পাদক রেজওয়ানুল হক এবং উপসম্পাদক মেহেদী আরজান। বইটিতে ১১টি অধ্যায়ের মাধ্যমে তারেক রহমানের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন, রাজনৈতিক যাত্রার সূচনা, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ, তৃণমূল সংগঠনের মাধ্যমে দলকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা, ষড়যন্ত্রমূলক গ্রেপ্তার ও পরবর্তী ঘটনাবলি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তার নেতৃত্ব এবং দেশ গঠনের ক্ষেত্রে তার অবদানের বিভিন্ন দিক বিবৃত হয়েছে।