সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেটের দিকনির্দেশক রোহিত শর্মার টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা বলিষ্ঠ প্রত্যাশার সৃষ্টি করেছিল। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই এই পথ অনুসরণ করতে চলেছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানদের একজন বিরাট কোহলি। ক্রিকেটের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংস্করণ থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছেন এই মহান ক্রিকেটার। তার অবসরের বিষয়ে ইতিপূর্বেই বিসিসিআইকে তিনি অবগত করেছেন, এমন তথ্য দিয়েছে ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো।
ক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরাট কোহলি তার অবসর সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। মাস খানেক আগে থেকেই এই আলোচনা শুরু হয়ে গেছে এবং কোহলি স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নিতে চান।
কোহলির অবসরের ফলে ভারতীয় টেস্ট দলে অভিজ্ঞতার ঘাটতি দেখা দেবে। এর আগেই রোহিত শর্মা টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন, রবিচন্দ্রন অশ্বিন সব ধরনের ক্রিকেট থেকে সরে গেছেন, এছাড়া চেতেশ্বর পুজারা ও আজিঙ্কা রাহানে টেস্ট দলে নেই এবং মোহাম্মদ শামি এখনও পুরোপুরি ফিটনেসে ফিরে আসেননি।
আগামী মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা রয়েছে ভারতীয় দলের। সেখানে কোহলির অবসরের ফলে নতুন অধিনায়ক নিয়ে চাপ বেড়ে যাবে। যদিও গুঞ্জনের মাঝেও বিসিসিআইর আশা, কোহলি ইংল্যান্ড সিরিজে জনগণের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মাঠে থাকবেন।
যদি কোহলি এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসেন, তবে তাঁর দীর্ঘ ১৪ বছরের গৌরবোজ্জ্বল টেস্ট ক্যারিয়ার সমাপ্ত হবে। এই সময়ে তিনি মোট ১২৩টি টেস্ট খেলেছেন, যেখান থেকে ৬৮টি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন। টেস্টে তিনি ৯২৩০ রান করেছেন গড়ে ৪৬.৮৫, আর সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৩০টি।
তবে বিসিসিআই তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য কোহলিকে অনুরোধ করেছে। যদিও কোহলি এর প্রতি কী প্রতিক্রিয়া দেবেন, তা এখনও অনিশ্চিত। ভারতের বরাত দিয়ে আইএএনএস জানিয়েছে, ‘তিনি এখনো অত্যন্ত ফিট ও ক্ষুধার্ত, ড্রেসিংরুমে তার উপস্থিতি পুরো দলের মনোবল বাড়ায়। আমরা তাকে বিশ্বাস করি, এবং আশা করি সে কিছু সময় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
কোহলির সাম্প্রতিক টেস্ট পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। অস্ট্রেলিয়া সফরে ৫টি টেস্টে মাত্র ২৩.৭৫ গড়ে ১৯০ রান করেছেন, যেখানে তার আউট হওয়ার বেশিরভাগ কারণ থাকছে অফস্টাম্পের বাইরে বল খেলা। একসময় টেস্টে তার গড় ছিল ৫০-এর বেশি, কিন্তু গত পাঁচ বছরে তার পারফরম্যান্স ক্রমেই কমেছে। ৩৭ ম্যাচে মাত্র তিনটি সেঞ্চুরি করা তার নামের সঙ্গে মানানসই নয়।
অস্ট্রেলিয়া সফরের পর কোহলি কিছুটা নিষ্ক্রিয়তার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘হয়তো চার বছর পর আর অস্ট্রেলিয়া সফরের সুযোগ পাব না।’ এখন সেটি বাস্তবতা আকারে পরিণত হতে চলেছে।