ঢাকা | শনিবার | ১৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বের মাধ্যমে টেক্সটাইল শিল্পে রূপান্তর আনতে এনইউবির সেমিনার

দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং কার্বন নিঃসরণ—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও পরিবেশগত সংকটে কার্যকর সমাধান হিসেবে প্রস্তাবিত ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বকে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হলো নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এনইউবি) আয়োজিত এক বিশেষ সেমিনারে।

রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে ‘‘The Three Zero Theory and Its Transformational Impact on Bangladesh’s Textile Industry’’ শীর্ষক এই সেমিনারে বক্তারা বলেন, টেক্সটাইল খাতের ভবিষ্যত টেকসই করতে হলে পরিবেশ সংরক্ষণ ও মানুষের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তারা শিল্পখাতে রূপান্তরমূলক পরিকল্পনা গ্রহণের আকাঙ্ক্ষা জানান।

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে H&M এর সাসটেইনেবিলিটি বিশেষজ্ঞ পার্থ রায় বলেন, “দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ কমানোর এই তত্ত্ব আমাদের কাজের মূল ভিত্তি। যদি বাংলাদেশে এটি টেক্সটাইল শিল্পে সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়, তাহলে আমরা বিশ্ববাজারে নেতৃত্ব দেওয়ার শক্ত অবস্থানে পৌঁছাতে পারব। তবে এজন্য প্রয়োজন উন্নত নীতিমালা, আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণ এবং দক্ষ কর্মী প্রস্তুতকরণ।”

GSCS ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের টেকনিক্যাল ম্যানেজার সাফায়েত বিন ইসলাম উল্লেখ করেন, “সাসটেইনেবিলিটি এখন আর বিকল্প নয়, এটি শিল্পখাতের এক অবিচ্ছেদ্য বাস্তবতা। পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করাই আগামী দিনে টেক্সটাইল খাতের প্রধান চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা।”

পটুয়াখালীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, “থ্রি জিরো শুধু একটি তত্ত্ব নয়, এটি বাস্তবভিত্তিক রূপান্তরের একটি মডেল, যা আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোতে গঠনমূলক পরিবর্তন আনতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা ও প্রয়োগের মাধ্যমে এর বাস্তব রূপরেখা নির্মাণ সম্ভব।”

বক্তারা আরও জানান, এনইউবির টেক্সটাইল বিভাগ ইতিমধ্যে টেক্সটাইল বর্জ্য পানির পুনর্ব্যবহার, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাস, পরিবেশবান্ধব ডাইং প্রযুক্তি, এনার্জি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি এবং আগুন প্রতিরোধী-তাপ নিরোধক কম্পোজিট তৈরির মতো উন্নত গবেষণায় জোর দিয়েছে।

বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক জি এম ফয়সাল ‘থ্রি জিরো’ ভিত্তিক একটি গবেষণা মডেল উপস্থাপন করেন, যেখানে দক্ষ মানবসম্পদ গঠন, গ্রিন এনার্জি ব্যবহারের প্রসার এবং বর্জ্য পুনর্ব্যবহারকে মূল ভিত্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। এই সেমিনার বাংলাদেশ টেক্সটাইল শিল্পে পরিবেশ ও সমাজের ভারসাম্য রক্ষা করে উন্নতির নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রত্যাশা বহন করে।