জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে, তা পুরোনো ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে চলতে পারে না।
রবিবার (৬ জুলাই) চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘বিচার, সংস্কার, তারপর নির্বাচন’ স্লোগানে অনুষ্ঠিত জুলাই পদযাত্রার পথসভায় বক্তৃতায় তিনি এই বক্তব্য প্রদান করেন। দুপুর ২টায় নওগাঁ থেকে শুরু করে শান্তিমোড় এলাকায় অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং নানা মোড় পেরিয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে শেষ হয়, যেখানে এনসিপির নেতারা বক্তব্য রাখেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা এসেছি ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন নিয়ে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ আমরা সবাই চাই। আমরা শিশু থেকে বরাবর একটি নতুন বাংলা চাই যেখানে গণঅভ্যুত্থানের পর মৌলিক রাষ্ট্র সংস্কার এবং গণত্যাকারীদের বিচারের জন্য লড়াই চলবে। আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাই।”
তিনি আরও যোগ করেন, “চাঁপাইনবাবগঞ্জে যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ খাতে বৈষম্যের অভিজ্ঞতা রয়েছে, আমরা আশা করি নতুন বাংলাদেশে দেশের সব অঞ্চলের দুরত্ব দূর হবে।”
সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতের বিএসএফের নৃশংসতায় নাহিদ ইসলাম কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “সীমান্তে বিএসএফ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে, গ্রেনেড নিক্ষেপ ও বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে। আমরা আর এসব নির্যাতন সহ্য করব না। সীমান্তে আরও আগ্রাসন হলে আমরা লং মার্চের ঘোষণা দেব এবং নিজেরাই আমাদের সীমান্ত রক্ষা করব।”
দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ চালানো ফ্যাসিবাদী শাসনবর্ষ মানুষের ওপর নির্মম নির্যাতন করেছে, যার ফলস্বরূপ ভারতের পক্ষেও সীমান্তে হতাহত হয়েছে।”
সাবেক ছাত্র নেতা নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম কঠোর হবে। ভারত আর কোনোদিন যেন অন্যায়ের মাধ্যমে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে এমন আচরণ করতে না পারে। আমরা চাই না আগামী দিনে কোনো আঞ্চলিক বৈষম্য থাকুক। ছাত্র-জনতার জীবন বলি দিয়ে প্রতিষ্ঠিত নতুন বাংলাদেশ একেবারেই পুরোনো সিস্টেমে চলতে পারবে না।”
এদিন এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে এনসিপির চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয় উদ্বোধন করা হয় এবং তারা রাজশাহীর উদ্দেশে রওয়ানা দেন।