হজে না পাঠিয়েও অর্থ ফেরত দিতে গড়িমসি ও ভয়-ভীতি দেখানোর কারণে একটি হজ এজেন্সির
নিবন্ধন সনদ বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) জামালপুরের ছালাম আবাদ ট্রাভেলস নামের হজ এজেন্সির (হজ লাইসেন্স
নং-১৪৪৭) নিবন্ধন সনদ বাতিল করে সম্প্রতি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন
জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জামালপুরের ইসলামপুরের মো. নুরুজ্জামানসহ ৬ জন অভিযোগ এই
এজেন্সির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ হলো, ২০২৪ সালের হজে যাওয়ার
জন্য এজেন্সির প্রতিনিধি ও মালিকের ছেলে সৈয়দ আবু তালহাকে ২৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা দেন
তারা। কিন্তু এজেন্সি তাদের হজে পাঠাতে পারেননি।
অভিযোগকারীরা অর্থ ফেরত চাইলে আবু তালহা টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা করেন
ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। পরে স্থানীয় বিচার-সালিশের পর আবু তালহা অভিযোগকারীকে ৩১
জুলাই ৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকা ফেরত দেন। অবশিষ্ট টাকা আদায় করতে না পেরে অভিযোগকারী গত
২১ নভেম্বর ধর্ম সচিবের কাছে অভিযোগ দেন।
পরে গত ১ ডিসেম্বর অতিরিক্ত সচিব (হজ) উভয় পক্ষের শুনানি নেন। এতে এজেন্সির
প্রতিনিধি আবু তালহা ৩০ জানুয়ারির মধ্যে অবশিষ্ট পুরো টাকা ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার
করেন এবং আলাদা সমঝোতা পত্রে উভয় পক্ষ সই করেন। সমঝোতা পত্র অনুসারে আবু তালহা ৩০
জানুয়ারি অভিযোগকারীকে দ্বিতীয় পর্যায়ে মাত্র ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন বলে
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
দুই কিস্তিতে ১২ লাখ ৭৪ হাজার টাকা পরিশোধ করার পর বাকি ১৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করায় অভিযোগকারী ওই টাকা পাওয়ার জন্য ধর্ম সচিবের
কাছে ১৮ জুন আবারো একটি অভিযোগ দেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে গত ২৯ জুন উভয় পক্ষকে নোটিশ দিয়ে ফের শুনানি হয়।
এ ছাড়া, শুনানিতে বাকি অর্থ ৩০ জানুয়ারির মধ্যে ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করে সমঝোতা
পত্র সইয়ের পরও অঙ্গীকার ভঙ্গ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, হজযাত্রীদের হজে যাওয়া থেকে বঞ্চিত করে এজেন্সি ‘হজ ও ওমরাহ
ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১’ এর ধারা ১২ এর দফা (খ), (ঞ), (ট) ও (১) লঙ্ঘণ করে অনিয়ম ও
অসদাচরণ করেছে।
তাই ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১’ এর ধারা ১৩(১) অনুসারে ছালাম-আবাদ
ট্রাভেলসের নিবন্ধন সনদ বাতিল করা হলো। একই আইনের ধারা ১৩(৫) অনুযায়ী অভিযোগকারীসহ
৬ জন হজযাত্রীর আর্থিক ক্ষতি হওয়ায় তাদের প্রাপ্য অবশিষ্ট ১৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা
আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধের জন্য আদেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে অভিযোগকারীদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধে
ব্যর্থ হলে এজেন্সির জামানত থেকে ১৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে
অভিযোগকারীদের পরিশোধ করতে হবে। ক্ষতিপূরণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ এজেন্সিকে ফেরত
দেওয়ারও আদেশ দেওয়া হয়।
একই আইনের ধারা ১৩(৬) অনুসারে এজেন্সিতে প্রাক-নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী থাকলে তাদের
পছন্দ অনুযায়ী অন্য এজেন্সিতে স্থানান্তরেরও আদেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।