অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া হকি কাপের ইতিহাসে এবারই প্রথম অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের নারী হকি দল, আর সেই প্রথম যাত্রায় তারা অসাধারণ সাফল্য এনে দিয়েছে। চীনের দাজহুতে অনুষ্ঠিত এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ নারী দল কাজাখস্তানকে ৬-২ গোলে উড়িয়ে ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত করেছে। এই জয়ে দলের আইরিন আক্তার হ্যাটট্রিক করে ম্যাচসেরা হয়েছেন এবং দলের জন্য নিজেকে আত্মপ্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছেন।
নারীদের এই সাফল্যের পাশাপাশি পুরুষ অনূর্ধ্ব-১৮ হকি দলও সুযোগ করে নিয়েছিল পদকের জন্য লড়াই করার, তবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে মালয়েশিয়ার কাছে ৫-২ গোলে পরাজিত হয়ে তারা চতুর্থ স্থানে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। পুরুষ দল টুর্নামেন্টে ভাগ্যক্রমে হংকংকে পরাস্ত করে যাত্রা শুরু করলেও সেমিফাইনালে জাপানের কাছে ৬-৪ গোলে হেরে ফাইনালে যেতে পারেনি।
আশ্চর্য হলেও সত্য, মেয়েদের টুর্নামেন্ট শুরুটা ছিল ব্যতিক্রমী। প্রথম গ্রুপ ম্যাচে জাপানের কাছে ১১-০ গোলে বিধ্বস্ত হলেও, দ্বিতীয় ম্যাচে উজবেকিস্তানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় তারা। এরপর হংকংকেও একই ব্যবধানে পরাজিত করে শেষ চারে উঠতে সক্ষম হয়। ফাইনালে ওঠার পথে চীনের কাছে বড় ব্যবধানে পরাজয়ের পর কাজাখস্তানের বিরুদ্ধে ২-২ গোলে ড্র করে তৃতীয় স্থানের লড়াইয়ের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ।
১১ জুলাই শুক্রবার কাজাখস্তানের সঙ্গে ড্র হওয়া ম্যাচের পর আজকের ম্যাচে মেয়েরা নিজেদের সত্যিকারের ক্ষমতা প্রমাণ করেছে। ম্যাচের শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও ১২ মিনিটের মধ্যে আইরিন আক্তার সমতা ফেরান, এরপর ১৮তম থেকে ২০তম মিনিটে আরও দুই গোল করে দলের স্কোরকে ৩-১ এ নিয়ে যান। অধিনায়ক শারিকা রিমন ৩৫তম মিনিটে দলের চতুর্থ গোল করেন, বাকি দুই গোলের কৃতিত্ব কণা আক্তার এবং রিয়াশা রিশির। যদিও ৫৯তম মিনিটে কাজাখস্তান একটি গোল শোধ করলেও সেটি ব্যবধান কমানোর বাইরে যায়নি।
পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দল গোল হজম করেছে ২৪টি, তবে বিপরীতে ১৪টি গোল করেছে। সর্বোচ্চ পাঁচ গোল করেছেন আইরিন আক্তার, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল করেছেন কণা আক্তার চারটি।
অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপে নারী বিভাগে ফাইনালে খেলবে জাপান ও চীন, আর পুরুষ বিভাগে সোনার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে জাপান ও পাকিস্তান। বাংলাদেশ নারী দলের এই সাফল্য দেশের হকি প্রেমীদের জন্য গর্বের এবং আগামী দিনে আরও বড় অর্জনের আশার আলো নিয়ে এসেছে।