ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ভাঙা টিনের ঘরে দিন কাটান সখীপুরের বৃদ্ধা ফজিলা

সখীপুর উপজেলার কালীয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে এক অতি অসহায় জীবন কাটাচ্ছেন ৬০ বছরের বৃদ্ধা ফজিলা বেগম। তার জীবনটি যেন একটানা সংগ্রামের গল্প। বর্ষা কিংবা বৃষ্টি এলে ভাঙা চালে পানি ঢুকে তার জীবনের সমস্ত স্বপ্নকে আরও দুর্বিষহ করে তোলে। ধারে কাছেও কোনো নিজস্ব শক্ত ঘর নেই, রয়েছে মাত্র একটি প্রাচীন, ভাঙাচোরা টিনের ঘর, যা দিয়ে তিনি তার জীবন চালান।

ফজিলা বেগমের স্বামীপ্রয়াণ ঘটেছে এক যুগ আগে। স্বামীর মৃত্যুর পর তার তিন ছেলের মধ্যে বড় তদন্ত ইফতেখার ও ছোট সোহেল মারা গেছেন, আর একমাত্র জীবিত ছেলে জুয়েল সে একজন প্রতিবন্ধী। এর ফলে তার প্রথম সন্তান না থাকার কারণে জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে তিনি তার নাতনি জান্নাতের (১০) সাথে দরিদ্র একটি ঘরে বসবাস করছেন।

সড়কের দিকে তাকালেই দেখা যায়, তার ঘরের ছাউনি মুখো শরীরের মতো মরিচা ধরে গেছে, ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানি ঠেকানোর জন্য পলিথিন ও পুরোনো কম্বল ব্যবহার করা হয়েছে, যার জন্য ওই ঘরটি প্রায় অর্ধবঞ্চিত হয়ে গেছে। দরজা-জানালাগুলো ভেঙে গেছে, পানি প্রবেশ করে ঘরটিকে অস্বাস্থ্যকর করে তোলে। একই অবস্থা রয়েছে তার এছাড়াও শৌচাগারটির।

ফজিলা বেগম বলেন, “একটা ভালো ঘর পেলে জীবনের শেষ সময়ে একটু শান্তিতে থাকতে পারতাম। আশপাশের মানুষ খাবার দিলে খাই, না দিলে কিছুই খাবার পাই না। প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা ও নাতনির ভালো খাওয়া-পড়ার ব্যবস্থা করতে পারছি না।” তিনি আরও জানান, তার মেঝো ছেলে মারা যাওয়ার পর তার রেখে যাওয়া একমাত্র কন্যা জান্নাতকে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছেন, কিন্তু পড়াশোনার খরচ ও খাবার যোগানো বন্ধ থাকায় জীবন কাটছে কষ্টে।

অতীতের এই দুর্দশার মাঝেই, সাম্প্রতিক আলাপে জানা গেছে, ৩১ আগস্ট রাতে তার ভাঙা ঘর থেকে চাল ও একটি মোবাইল চুরি হয়ে গেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন সিকদার বলেন, “তার আবেগপূর্ণ ও অসহায় জীবন নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগত। ভাঙা ঘরে থাকা ও শীত মৌসুমে তার জন্য জীবন আরও কঠিন হয়ে উঠবে। দ্রুত একটি ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে।”

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ জানান, “অতিরিক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। শীগগিরই তার জন্য বিধবা ভাতা চালুর ব্যবস্থা ও একটি ঘর নির্মাণে অর্থ সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।”