ঢাকা | বুধবার | ২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ভুয়া পাসপোর্টে নারীদের বিদেশে পাচারের অভিযোগে বিএমইটির ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

ভুয়া পাসপোর্ট ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে নারীদের বিদেশে পাচারের একটি বড় সুযোগ-সন্ধানের ঘটনা সামনে এসেছে। এই ঘটনার জেরে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এর ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে।

বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক স্বপন কুমার রায় বাদী হয়ে এই মামলা করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামির মধ্যে রয়েছেন বিএমইটির উপপরিচালক (বহির্গমন) মো. সাজ্জাদ হোসেন সরকার, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন উল্লাহ আকন্দ, জনশক্তি জরিপ কর্মকর্তা মো. নিজামউদ্দিন পাটোয়ারি, অফিস সহকারী ও কম্পিউটার অপারেটর মো. আজাদ হোসেন, এইচ. এ. ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং পার্টনার মো. আনোয়ার হোসেন, কে. এইচ. ওভারসিজের ম্যানেজিং পার্টনার মো. সালাউদ্দিন, মক্কা ওভারসিজের মালিক মো. জামাল হোসেন, ম্যানেজিং পার্টনারের তাসনিম ওভারসিজের মো. আনোয়ার হোসেন ভূঞা এবং এস. এম. ম্যানপাওয়ারের পার্টনার একরামুল হক।

এর আগে, দুদক কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এই জালিয়াতির তথ্য পেয়েছে। অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বিভিন্ন এজেন্সি পরস্পরের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রতারণার মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার জন্য নারীদের ‘প্রত্যাগত’ হিসেবে দাখিল করা হয়। তারা ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে প্রকৃত আবেদনকারীর পরিবর্তে অন্য ব্যক্তির পাসপোর্ট নম্বর ব্যবহার করে আবেদন জমা দিতো।

বিএমইটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থাপিত জাল পাসপোর্টগুলোকে যাচাই না করে ডাটাবেজের তদারকি ছাড়াই আর্থিক প্রলোভনে আক্রান্ত হয়ে এজেন্সিগুলোর সঙ্গে যোগসাজশে ৯ জন জাল পাসপোর্টধারী নারীকে ছাড়পত্র প্রদানের অনুমোদন দেন।

সূত্র জানায়, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ম লঙ্ঘন করে ২৫ বছরের কম বয়সী ৪ জন বিশুদ্ধ অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীকেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অনিয়মের ফলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে জালিয়াতি এবং নিয়মবহির্ভূত ছাড়পত্র গ্রহণে সহায়তা করা হয়েছে।

মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার মাধ্যমে নারীর নিরাপত্তা ও আইনের শৃঙ্খলা রক্ষায় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।