ঢাকা | রবিবার | ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ভোলায় টানা প্রবল বৃষ্টিতে নিমজ্জিত মাছের ঘের ও ফসলি জমি, পানিবন্দি বহু মানুষ

ভোলার মনপুরা উপজেলায় গত দুই দিন ধরে অবিরাম ও ঝড়ো বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এই টানা বৃষ্টির ফলে শতাধিক পুকুর ও মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, যা কৃষিজমির ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে কৃষকদের ফসলি জমি ও সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গিয়ে অনেকের সম্ভাব্য ফসলি আয় বন্ধ হয়ে গেছে।

মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ মাইনুদ্দিন জানান, বছরব্যাপী মাছের চাষাবাদ করার জন্য তিনি ৮৫ লাখ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু টানা বৃষ্টির ফলে তার এগারোটি মাছের ঘের সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে গেছে। এর ফলে তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এক মুহূর্তেই ভাঙ্গে। ধারে ধার করে মাছ ছাড়লেও বৃষ্টির পানিতে অধিকাংশ মাছ ভেসে গেছে, যা বড় আর্থিক লোকসানের কারণ হয়েছে।

আরেক মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ রাজীব বলেন, তার ৫০ শতাংশ জমির মধ্যে দুটি মাছের ঘের ছিল, যেখানে তিনি দেশীয় ও বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করতেন। বৃষ্টির পানিতে ঘের ডুবে যাবার কারণে তার পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয় কৃষক ও মৎস্য ব্যবসায়ী মোঃ মিজান জানান, মনপুরার প্রতিটি বিল ও ঘের এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী ও কৃষকরা একই দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন। ধারাবাহিক বৃষ্টিতে ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় তাদের ক্ষেতের ফসল ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে, যা তাদের জীবিকা কঠিন করে তুলেছে।

মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আলী আহমেদ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। তবে বরাদ্দ না পেলে আর্থিক সাহায্যের সুযোগ নেই। পাশাপাশি মৎস্য কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ভাবে ব্যবসায়ীদের পুনরুদ্ধারের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন।

দীর্ঘায়িত বর্ষা মৌসুমের কারণে মনপুরা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্য চাষি ও প্রান্তিক কৃষকরা। ঘেরের মাছ ভেসে যাওয়ায় তারা সম্পূর্ণ দিশাহীন হয়ে পড়েছেন।

মনপুরা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আহসান তাওহিদ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে তাদের মাঠ কর্মীরা পৌঁছে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করছেন এবং দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ, দাসেরহাট, উত্তর সাকুচিয়া, রহমানপুর ও জংলারখাল এলাকার কয়েকটি গ্রাম পানি বন্দি হওয়ায় বাসিন্দারা আতঙ্ক এবং অসুবিধার মধ্যে জীবনযাপন করছেন। অর্থাৎ, ব্যাপক বৃষ্টির প্রভাবে এলাকাটি এখন সংকটে পড়েছে।