যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে যশোর সদর উপজেলার একটি এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে
দায়িত্বপ্রাপ্তদের ভুলে রসায়নে ফেল করেছিল ৪৮ জন পরীক্ষার্থী। রসায়ন পরীক্ষার
ব্যবহারিক নম্বর যোগ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
ঘটনার তিন দিন পর রবিবার (১৩ জুলাই) ফলাফল সংশোধন করে প্রকাশ করা হয়। সংশোধিত ফলে
দেখা যায়, ওই ৪৮ পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই জিপিএ-৫ পেয়েছে।
যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই কেন্দ্রে
পরীক্ষা দেওয়া ৩২৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের ৪৮ জনের রসায়নের ব্যবহারিক
নম্বর যোগ না হওয়ায় তাদের ফলাফল ফেল হিসেবে প্রকাশিত হয়েছিল। বিষয়টি বোর্ড
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে রোববার সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়।
ওই ৪৮ জনের একজন সাড়াপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিয়ারাজ ইসলাম। সে জানায়,
জিপিএ-৫ পাব বলেই আত্মবিশ্বাস ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত ফলে
১০টি বিষয়ের মধ্যে আটটিতে জিপিএ-৫, একটিতে এ গ্রেড এবং রসায়নে ফেল দেখানো হয়। তবে
সংশোধিত ফলে তার জিপিএ-৫ এসেছে।
আরও পড়ুন: ছয় বন্ধুর পাঁচজন পেল জিপিএ ৫, আরেকজনের আত্মহত্যা
মিয়ারাজ বলে, ‘এই কয়দিন বাবা-মাসহ পরিবারের কারও খাওয়া-ঘুম ছিল না। বাড়ির সবার মন
খারাপ ছিল। এখন জিপিএ-৫ পেয়ে সবাই খুব খুশি।’
বোর্ড সূত্রে জানা যায়, যশোর সদরের পুলেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে এ বছর
ছয়টি বিদ্যালয়ের ৩২৯ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের
৪৮ জন শিক্ষার্থী ছিল।
১০ জুলাই প্রকাশিত ফলাফলে বিজ্ঞান বিভাগের সব শিক্ষার্থীকে রসায়নে অকৃতকার্য দেখানো
হয়। ফল বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দেখেন, রসায়নে সবাই ফেল করেছে।
এরপর সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলো কেন্দ্র সচিব খান জাহান আলীর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে
তিনি ফল সংশোধনের জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে আবেদন করেন।
বোর্ডে যাচাই করে দেখা যায়, ওই শিক্ষার্থীদের রসায়ন বিষয়ের ব্যবহারিক নম্বর যুক্ত
করা হয়নি। পরে কেন্দ্র থেকে পাঠানো ব্যবহারিক নম্বর যোগ করে রোববার সংশোধিত ফল
প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন: এসএসসি: যশোর বোর্ডে পাসের হার ৭৩.৬৯ শতাংশ, কমেছে জিপিএ-৫
কেন্দ্র সচিব খান জাহান আলী বলেন, ‘কেন বিজ্ঞান বিভাগের সবার রসায়নে ফেল দেখানো হলো
তা আমরা বুঝতে পারিনি। ফল সংশোধনের আবেদন করার পর শিক্ষাবোর্ড গিয়ে সংশোধন করা হয়।’
যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবদুল মতিন বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে রসায়ন
বিষয়ের ব্যবহারিক নম্বর পাঠানো হয়নি। ফলে ৪৮ শিক্ষার্থীর ফলাফল অসম্পূর্ণ ছিল এবং
সবার ফল ফেল এসেছে। কেন্দ্রের ভুলেই এমনটা হয়েছে। রোববার সংশোধিত ফল দিয়ে দেওয়া
হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, কেন্দ্রের এই ভুল বা অবহেলার জন্য কেন্দ্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।