ঢাকা | মঙ্গলবার | ২২শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে নতুন অধ্যায় শুরু করবে বাংলাদেশ

টেস্ট সিরিজে হতাশাজনক ফলাফল পেছনে ফেলে শ্রীলংকার মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে নতুন উদ্যমে শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আগামীকাল কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।

এই ওয়ানডে সিরিজের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ঘটাতে যাচ্ছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে, এক বছরের জন্য ওয়ানডে দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্ব নেন মিরাজ, যিনি আগের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তের জায়গায় এসেছেন।

গত টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের অবস্থা ছিল মিশ্র; প্রথম টেস্ট ড্র হলেও দ্বিতীয় টেস্ট ইনিংস ও ৭৮ রানে হারে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে ব্যাটিং-বোলিংয়ে দল ভাল পারফর্ম করলেও দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাটিংয়ে ধস নামায় হার স্বাভাবিক ছিল। টেস্ট সিরিজের এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ওয়ানডে সিরিজে ভালো করার আশা বাংলাদেশের।

অধিনায়ক মিরাজও ওয়ানডে সিরিজে দলের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী ও জানিয়েছেন, এই সিরিজে দলের লড়াই ভালো হবে।

শ্রীলংকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ওয়ানডে রেকর্ড অনেকটাই নিচে, ৫৭ ম্যাচে মাত্র ১২টি জয়, ৪৩ ম্যাচে পরাজয় এবং ২টি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক পাঁচ ম্যাচে বাংলাদেশ তিন জয় করে উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে। ২০২৪ সালের মার্চে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল। এরপর আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে লড়াই করেছে বাংলাদেশ, যেখানে আফগানিস্তানের কাছে ২-১ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স কিছুটা হতাশাজনক ছিল, যেখানে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ।

শ্রীলংকার মাটিতে বাংলাদেশের জয় সংখ্যা আরও কম; ২৪ ম্যাচে মাত্র ২ জয়, ২০ হার ও ২ পরিত্যক্ত ম্যাচ। ২০১৯ সালের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে শ্রীলংকার মাটিতে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে এশিয়া কাপেও দুই ম্যাচ খেলে দুটিতেই হেরেছে টাইগাররা। সর্বশেষ ছয় ম্যাচে জয় নেই শ্রীলংকার মাটিতে।

সৌভাগ্যক্রমে পেসার তাসকিন আহমেদ আঘাত থেকে সুস্থ হয়ে দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, যা পেস আক্রমণে শক্তি যোগ করবে। আড়াই বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরেছেন ধারাবাহিক ফর্মে থাকা মোহাম্মদ নাইম। এছাড়াও দলে আছেন লিটন দাস, শামীম পাটোয়ারী এবং বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম, যাদের প্রত্যাশা ব্যাপক।

অন্যদিকে অসুস্থতা ও ব্যক্তিগত কারণে বাদ পড়েছেন সৌম্য সরকার, নাসুম আহমেদ এবং ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

বাংলাদেশের দল: মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, মোহাম্মদ নাইম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, লিটন দাস, জাকের আলী, শামীম পাটোয়ারী, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ।

শ্রীলংকা দল: চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), পাথুম নিশাঙ্কা, আভিস্কা ফার্নান্দো, নিশান মাধুশকা, কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, কামিন্দু মেন্ডিস, জেনিথ লিয়ানাগে, দুনিথ ওয়েলালাগে, হাসারাঙ্গা ডি সিলভা, মহেশ থিকশানা, জেফরি ভান্ডারসে, মিলান রত্নায়েকে (ফিট থাকলে), দিলশান মাধুশঙ্কা, আসিথা ফার্নান্দো, ইশান মালিঙ্গা।

আগামী ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের লক্ষ্য টেস্টের হতাশা কাটিয়ে মাথা উঁচু করে লড়াই করা এবং শ্রীলংকার মাটিতে ভালো ফল অর্জন করা। সমর্থকদের উৎসাহে এবং খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাসে এবার জয় আসায় সন্দেহ নেই।