জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলনে কৃষক-শ্রমিকদের মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি। মাঠ থেকে মিষ্টি আলু তুলতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন চরাঞ্চলের অনেকেই। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকার পাশাপাশি বাজার দর ভালো থাকার কারণে এখানকার কৃষকদের লাভের মুখ দেখেছে।
সরিষাবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার ধারাবর্ষা, বড়বাড়ীয়া, কৈজুরী, কান্দারপাড়া, সৈয়দপুর, বয়সিংহ, ভাটারা, মোহনগঞ্জ, কাশারীপাড়া, পাখাডুবী, ফুলবাড়িয়া, পারপাড়া, গোপীনাথপুর, কৃষ্ণপুর, চর হরিপুর, আওনা, পোগলদিঘাসহ বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি আলুর ব্যাপক চাষ হয়েছে। কম খরচে লাভজনক হওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষকেরা মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকছেন দিন দিন।
উপজেলার কামরাবাদ ও ভাটারা ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, বিশাল মাঠ সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে। কৃষকরা কুপিয়ে আগলা করছেন জমি, আর নারী ও শিশুরা করলেও আলু সংগ্রহে ব্যস্ত। মিষ্টি আলু ক্ষেতে বসেই ওজন করে বস্তাবন্দি করছেন স্থানীয়রা। কেউ কেউ এসব আলুর লতা গবাদিপশুর খাবার হিসেবে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল হাই, সাদেক আলী ও রাশেদুল ইসলাম জানান, মিষ্টি আলু চারা রোপণের প্রায় ৯০ দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ পেকে ওঠে। এ বছর আবহাওয়ার সহায়তায় ফলন হয়েছে রেকর্ড, পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় শহরে এই এলাকার মিষ্টি আলুর চাহিদাও ব্যাপক। পাইকাররা এক মণ আলুর জন্য ১ হাজার থেকে ১,২০০ টাকা পর্যন্ত দাম দিচ্ছেন। মিষ্টি আলু মাঠ থেকেই পাইকাররা কিনে নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
অন্য একজন চাষি আব্দুল মোতালেব বলেন, নদীর ধারের প্রায় এক একর জমিতে তিনি মিষ্টি আলু চাষ করেছেন এবং প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ১০০ মণ ফলন পেয়েছেন। প্রতি মণ আলু তিনি ১,২০০ থেকে ১,৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। খরচ বাদেও একটি বিঘা জমি থেকে প্রচুর লাভ হয়েছে যা অন্যান্য ফসল থেকে পাওয়া সম্ভব না।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অনুপ সিংহ জানান, সরিষাবাড়ীতে এ বছর মিষ্টি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮০ হেক্টর, কিন্তু বাস্তবে ৬৭৫ হেক্টরে চাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৯৫ হেক্টর বেশি। কম খরচ ও বেশি লাভজনকতার কারণে চরাঞ্চলের কৃষকরা এ ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এই সাফল্য কৃষকদের জীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে।