চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন এবং সাক্ষ্যগ্রহণ আগামীকাল শুরু হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানিয়েছেন, আগামীকাল মামলার সূচনা বক্তব্য প্রদান করা হবে যা আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। একই সময়ে সাক্ষ্যগ্রহণের কাজও শুরু হবে।
এই মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার আদেশ দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে।
মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে রাজ সাক্ষী হিসেবে সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ৩ আগস্ট মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এবং অন্যান্য প্রসিকিউটররা মামলার শুনানি পরিচালনা করছেন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছেন। মামলায় গ্রেফতার আসামী সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ ছিলেন।
গত ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল-১ পলাতক আসামী শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন এবং পরবর্তীতে ৭ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়। কিন্তু আসামীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবীদের মাধ্যমে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি হয়। ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ আনা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার আন্দোলনের কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুনর্গঠন করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম মামলাটি হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে; একটি গুম-খুনের ঘটনায় এবং অন্যটি মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
জুলাই আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করার সময় আওয়ামী লীগ ও তার সমর্থিত প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক অংশের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ওঠে। এই সকল নিরপেক্ষ বিচারের জন্য দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে।
