চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আগামীকাল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানান, মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন এবং প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে। আদালতের অনুমতি পেলেই এই বিষয়গুলোর সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
এই মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল-১। মামলার গুরুত্বপূর্ণ এক সংবাদের অংশ হিসেবে, দোষ স্বীকার করে ঘটনার তথ্য জানাতে রাজি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে রাজ সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে মামলার পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আইনজীবী জায়েদ বিন আমজাদ শুনানি করেন।
এর আগে, গত ১৬ জুন ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হাজির হওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেন, কিন্তু তারা আদালতে উপস্থিত হননি। এরপর তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী দিয়ে মামলার জন্য অভিযোগ গঠন করা হয়। গত ১০ জুলাই আদালত অভিযোগ গঠন করেন এবং বিচার শুরু হয়।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা চলছে। একটি মামলায় সাড়ে পনেরো বছরের আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অন্যটি রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের সম্পর্কিত।
গত বছর জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলন দমন করার সময় সরকারি ও দলের ক্যাডাররা, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অংশ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অপরাধ সম্পর্কে বিচার চলছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এই মামলাগুলো দেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন এবং সামাজিক উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে।