ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ১৪ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

জামিনের জন্য আদালতে কাঁদলেন ছাগলকান্ডের মতিউর

আলোচিত ছাগলকান্ডের ঘটনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর

রহমানকে জামিনের জন্য আদালতে কাঁদতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন তাকে ধৈর্য ধরতে

বললেন এবং জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে দেন। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায়

মতিউরের আইনজীবী মো. ওয়াহিদুজ্জামান জামিন শুনানির শেষে মতিউর নিজে কিছু বলার

অনুমতি চান।

আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, ‘আমি কারাগার থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) একটি

চিঠি দিয়েছিলাম। আমি আপনাকে এ চিঠিটি দিলাম। আপনি দয়া করে আমার চিঠিটি পড়ে যে আদেশ

দেবেন, আমি তা মাথা পেতে নেব।’

মতিউর রহমান আরও বলেন, ‘আমার পরিবারটা ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি ও আমার স্ত্রী দুজনেই

কারাগারে আছি। আমার মা প্যারালাইজড, তাকে দেখার কেউ নেই।’

এই কথা বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন মতিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাকে জামিন দিন। আমাকে

জামিন দিলে আমার কাছে যে নথিপত্র আছে, আমি তা আদালতে উপস্থাপন করে নিজেকে নির্দোষ

প্রমাণ করতে পারব।’

তখন বিচারক তাকে বলেন, ‘আপনি দোষী বা নির্দোষ তা এখনই বলা যাবে না। মামলাটি এখন

তদন্তাধীন। তাই আপনাকে আরও ধৈর্য ধারণ করতে হবে।’

গত বছর কোরবানির জন্য ঢাকার মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ইফাত নামের এক

তরুণের ১৫ লাখ টাকা দামে ছাগল কেনার ফেসবুক পোস্ট ঘিরে মতিউর রহমানকে নিয়ে সামাজিক

যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়।

ছাগলসহ ইফাতের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন তোলা হয়—১৫ লাখ টাকা দিয়ে

ছাগল কেনার অর্থের উৎস কী? ইফাত সংবাদমাধ্যমে বাবার পরিচয় দিলে মতিউর রহমানের নাম

উঠে আসে।

মতিউর রহমান এ আলোচনায় ঘি ঢালেন, ছেলের পরিচয় ‘অস্বীকার’ করে। একটি টেলিভিশনের

প্রশ্নের জবাবে তিনি দাবি করেন, মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে কেউ তার ছেলে বা আত্মীয়

নয়, এমন নামে কাউকে তিনি চেনেন না পর্যন্ত। তার একটিই ছেলে, যার নাম তৌফিকুর রহমান।

এরপর ইফাতের সঙ্গে মতিউর রহমান এবং পরিবারের অন্যদের ছবিও প্রকাশিত হয়। ইফাত হচ্ছেন

মতিউর রহমানের দ্বিতীয় পক্ষের (স্ত্রীর) ছেলে।

মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি ছিলেন শিক্ষা ক্যাডারের সাবেক

কর্মকর্তা। সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি রাজনীতিতে নাম লেখান। পরে নরসিংদীর রায়পুরা

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হন।

চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি মতিউর রহমান এবং তার স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকিকে গ্রেপ্তার

করে ডিবি পুলিশ।

গত ৬ জানুয়ারি মতিউর রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন

কমিশন (দুদক)। প্রত্যেক মামলায় মতিউর রহমান আসামি।